ব্রাজিলের সস্তায় গরুর মাংস রপ্তানি ও বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য সম্প্রসারণ

ব্রাজিলের সস্তায় গরুর মাংস রপ্তানি ও বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য সম্প্রসারণ

ব্রাজিল বাংলাদেশে সস্তায় গরুর মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একই প্রস্তাব দেওয়া হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও প্রয়োজনীয় সনদ না পাওয়ায় তা বাস্তবায়িত হয়নি।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্রাজিল বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই)।

রাষ্ট্রদূত জানান, ব্রাজিল বিশ্বের বৃহত্তম গরু ও পোলট্রি মাংস উৎপাদনকারী দেশ। অনেক মুসলিমপ্রধান দেশে ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস রপ্তানির অনুমতি রয়েছে, তবে বাংলাদেশে এ অনুমতি এখনো মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হলেও অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।

তিনি বলেন, ব্রাজিল থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস সাড়ে চার মার্কিন ডলারে (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৯৫ টাকা) রপ্তানি করা সম্ভব। বর্তমানে ঢাকার বাজারে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৬৫০-৭০০ টাকার মধ্যে।

ব্রাজিল শুধু মাংস রপ্তানি নয়, কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং ওষুধ শিল্পে প্রযুক্তি স্থানান্তর করে বাংলাদেশে উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করতে পারে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। ব্রাজিলের একজন গরু দিনে গড়ে ৪৫ কেজি দুধ দেয়, যেখানে বাংলাদেশের গরু ৭-৮ কেজি দুধ দেয়।

রাষ্ট্রদূত আরও জানান, ব্রাজিল সরকারের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসুরক্ষা কর্মসূচিতে প্রচুর ওষুধের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। তবে সনদ জটিলতা দূর করাই বড় চ্যালেঞ্জ।

আগামী ১৫-১৮ জুন ব্রাজিলের সাও পাওলোতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বাংলাদেশি আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করার পাশাপাশি ব্রাজিলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংযোগ গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বিবিসিসিআই-এর সহসভাপতি মো. সাইফুল আলম বলেন, ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি হলেও, বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে রপ্তানি মাত্র ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ প্রদর্শনী বাণিজ্য ভারসাম্য আনার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

প্রদর্শনীতে ১০০-১৫০ জন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করবেন। এটি সয়াবিন, চিনি এবং শিল্প যন্ত্রপাতির মতো উচ্চমানের পণ্য আমদানির সুযোগ তৈরি করবে।

ব্রাজিল ও বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র আরও প্রসারিত করতে বদ্ধপরিকর বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।