আঘাতজনিত সমস্যায় করণীয়

প্রতিনিয়ত মানুষ ছোট-বড় অনেক ধরনের আঘাত পায়। এর কোনোটি গুরুতর হয়, আবার কোনোটি কম জটিল হয়। সাধারণত কম ধারালো বস্তুর দ্বারা আঘাত বা ভোঁতা আঘাত, পারিবারিক বা সামাজিক কলহের জেরে ব্লান্ট ট্রমা, দুর্ঘটনাজনিত কারণেও বড় ধরনের আঘাত পায় মানুষ। তবে বুক বা পেট অথবা মাথায় ভোঁতা আঘাত থেকে মস্তিষ্ক, কিডনির সমস্যাসহ অনেক সময় মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই যেকোনো ধরনের আঘাতই হোক না কেন, তাত্ক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
ভোঁতা আঘাত পেলে
কম ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত পেলে সেই স্থানটি ফুলে যায়, ব্যথা হয়, লাল বা কালো হয়, নড়াচড়ায় অসুবিধা হয়। অনেক সময় আঘাতের কারণে নার্ভ ইনজুরি হয়। এটি কিন্তু মারাত্মক একটি সমস্যা।
করণীয়
♦ আঘাতের স্থানে কোনো কিছু মালিশ না করা
♦ প্রথম অবস্থায় ঠা-া বা বরফ দেওয়া
♦ আঘাদের অংশ বিশ্রামে রাখা
♦ প্রচুর পানি পান করা
♦ স্বল্পমাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার করা
♦ বুকে বা মাথায় অথবা পেটে আঘাত পেলে অনতিবিলম্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
ছুলে গেলে
হাতে বা পায়ে ছুলে যায়নি এমন লোক কম পাওয়া যাবে। রাস্তাঘাট বা খেলার মাঠে পড়ে গিয়ে বা যানবাহনের দুর্ঘটনায় প্রায়ই এমনি ঘটে। ছুলে গেলে সাধারণত চামড়া উঠে বা ছিঁড়ে যায়। তবে খুব বেশি গভীর হয় না। ময়লা বা ধুলাবালু আটকানো থাকে। অল্প অল্প রক্তপাত হতে পারে, বিশেষ করে প্রেসার পয়েন্ট বা হাড়ের ওপরের অংশে।
করণীয়
♦ প্রথমে নরমাল স্যালাইন দিয়ে পরিষ্কার করা ভালো। তবে নরমাল স্যালাইন না থাকলে ট্যাপের ঠা-া পানি দিয়ে ছুলে যাওয়া স্থানটি পরিষ্কার করে ভালো কোনো অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন লাগাতে হবে।
♦ ছুলে যাওয়ার স্থানটি খুব বেশি গভীর না হলে অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন ক্রিম দিনে তিন-চারবার লাগানো যেতে পারে। আর গভীরতা বেশি হলে প্রথম এক-দুই দিন ড্রেসিং দিয়ে ঢেকে রাখা ভালো। তবে কখনোই ড্রেসিং বেশিদিন দেওয়া ঠিক নয়। এজাতীয় সমস্যা খোলা রেখে চিকিৎসা করাই ভালো। অনেক সময় ক্ষতের গভীরে চামড়ার নিচে রক্ত জমাট বাঁধে, যা ড্রেসিং তৈরির মাধ্যমে চামড়ার পচন ধরায়। সে ক্ষেত্রে ছোট করে কেটে রক্ত বের করে দেওয়া ভালো।
♦ যদি টিটেনাসের টিকা নেওয়া না থাকে, সে ক্ষেত্রে টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত।
সুচ বা পিনজাতীয় বস্তুর আঘাত
সাধারণত যাঁরা সেলাইয়ের কাজ করেন, তাঁদের এ ধরনের আঘাত বেশি হয়, যাকে বলে নিডলস্টিক ইনজুরি। আঘাতটি অতি সামান্য হলেও একে অবহেলা করা উচিত নয়। ছোট সমস্যা অনেক সময় জটিল আকার ধারণ করে। বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য নিডলস্টিক ইনজুরি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
করণীয়
♦ প্রথমে চাপ দিয়ে রক্ত বের করে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
♦ ভালো কোনো অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন দিয়ে ড্রেসিং করানো।
♦ প্রয়োজেনে টিটেনাসের টিকা নিন।
♦ প্রথম তিন-চার দিন লক্ষ রাখুন, আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে ফুলে যায় কি না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।