আলোচিত সেই মিন্নিকে দেখলেই ঘিরে ধরছেন কৌতূহলী মানুষ

আলোচিত সেই মিন্নিকে দেখলেই ঘিরে ধরছেন কৌতূহলী মানুষ

সাম্প্রতিক ধকল আর বিষাদ কাটিয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেষ্টা করছেন চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আলোচিত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। আদালতের কাজে, সামাজিক বিভিন্ন আয়োজনে, কেনাকাটা অথবা আত্মিয়ের বাড়িতে বাবার মোটরসাইকেলে চেপে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

মিন্নি জানিয়েছেন, সাধারন মানুষের হাজারো প্রশ্ন, ব্যপক উতসাহ আর জিজ্ঞাসু দৃষ্টির মধ্যে অনেক বিব্রত লাগলেও সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সচেষ্ট তিনি । এমন যেকোন পরিস্থিতিতে বিব্রত না হয়ে বরং ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন মিন্নি ও তার পরিবার।

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিনে মুক্ত হওয়ার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মিন্নি প্রায় রাতে ঘুমের মধ্যে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠত বলে জানিয়েছিলেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। উন্নত চিকিতসার জন্য প্রায়ই ঢাকা আসতে হয় বাবা মেয়েকে।

সম্প্রতি রাজধানীর গুলিস্তানে একটি মার্কেটে কেনাকাটার জন্য যান তারা। মার্কেটে যেতেই অসংখ্য কৌতুহলী মানুষ জমে বাবা-মেয়েকে ঘিরে।

মিন্নি জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আশে পাশে থাকা অনেক অজানা মানুষের ‘কটাক্ষ’ শুনতে হয় কোন সময়ে, কেও আবার আগ বাড়িয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন ‘কেমন আছি?’ কারো কারো চোখে মুখে থাকে অনেক প্রশ্ন… সব মিলিয়ে বিব্রত লাগলেও মাথা নিচু করে সব পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টাই করে যান মিন্নি।

সাধারন মানুষের নানা কথা কটাক্ষ আর কৌতুহলের এমন পরিস্থিতি নিয়ে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের দাবী,’মিন্নির জামিন হওয়ার পর পরিস্থিতি একদম পাল্টে গেছে’ তিনি জানান,’আগে সব মানুষ আমার আর আমার মেয়ে মিন্নির দিকে কেমন কেমন করে করে তাকাতো! আর এখন আমাদের দেখলে মানুষ উৎফুল্ল হয়, সমবেদনা জানায়। জানতে চায় মামলার অগ্রগতি নিয়ে।’

মিন্নির বাবা কিশোর আরও জানান, ‘মিন্নিকে দেখে মানুষের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। যেখানেই যাই সব মানুষ একসাথে জড়ো হয়ে যায়। আজকেও পুরো মার্কেটের মানুষ একত্র হয়ে গিয়েছিল। মেয়েকে জামা-কাপড় কিনে দিতে এসেছি । যে দোকানে কিনেছি সেখানে দোকানি অনেক আপ্যায়ন করেছে, খাওয়াতে চেয়েছে, এমনকি কাপড়ের দামে ডিসকাউন্টো দিয়েছে।’

মিন্নির বাবা আরো বলেন, মানুষ শুধু জড়োই হয় না। ছবি তুলবেই তুলবে। ছবি তোলার জন্য ভিড় সামলানো যায় না।’

‘মানুষের এমন আচরন কিভাবে নিচ্ছেন মেয়ে ও বাবা’? এমন প্রশ্নের জবাবে মিন্নির বাবা বলেন, ‘এটা মানুষের সম্মান। এই সম্মানের মর্যাদা যেন তারা রাখতে পারেন।’

এর আগে সম্প্রতি বহুল আলোচিত বরগুনা রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন আসামির সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয় গত মঙ্গলবার দুপুরে । এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবিরের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্নের মধ্য দিয়ে রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

এদিন কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক আটজন আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ ছাড়াও জামিনে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবার সঙ্গে উপস্থিত হন আদালতে। সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনও আদালতে হাজির হননি এ মামলার পলাতক প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মুসা বন্ড।