জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক

জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক

‘জলবায়ু অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। একই সঙ্গে তিনি কেবল সরকারি প্রতিষ্ঠানের নয়, সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নগরের বিডিএস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জলবায়ু অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তায়নকারী কর্তৃপক্ষসমূহের সঙ্গে অধিপরামর্শ সভায় এসব কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান। টিআইবির উদ্যোগে গঠিত সচেন নাগরিক কমিটি ওই পরামর্শ সভার আয়োজন করে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সচেতন নাগরিক কমিটির জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ গাজী জাহিদ হোসেন।

পরামর্শ সভায় জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে যে সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটা লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনে দিলে বরিশাল জেলার প্রকল্পগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জলবায়ু অর্থায়নে প্রকল্পগুলোতে কাজের ক্ষেত্রে টেকসই, কাঙ্খিত উপকার যাতে আশে সেব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। এটা কেবল সরকারি নয়, সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সেব্যাপারে জেলা প্রশাসন সব ধরণের সহযাগিতা প্রদান করবে।

তিনি বলেন, সরকারি কাজে সঠিকভাবে কাজ হয় না এমন অভিযোগ ওঠে। বাস্তবে যে ঠিকাদাররা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে উন্নয়ন কাজ করে, তারাই সরকারি ঠিকাদার হিসেবে কাজ করে। ঠিকাদাররা সরকাি কাজে ফাঁকি দিতে পারে। বেসরকারির প্রকল্পে ফাঁতি দিতে পারে না। এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ না দিয়ে যাতে ঠিকাদাররা কোনভাবে কাজে ফাঁকি দিতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। প্রকল্প এলাকায় প্রকল্প ব্যয়সহ সাইনবোর্ড স্থাপন করে দিতে হবে। যাতে যে কোন নাগরিক কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। 

সভায় ‘জলবায়ু অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং অংশগ্রহণ: চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির অ্যাসিটেন্ট ম্যানেজার- রিসার্চ (জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন), মো: রাজু আহম্মেদ মাসুম। ‘টিআই-টিআইবি-সনাক, সনাক এর কার্যক্রম এবং জলবায়ু অর্র্র্থায়নে খাতে সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে করণীয় শীর্ষক প্রতিদেন তুলে ধরেন সনাক এর জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক শুভংকর চক্রবর্তী।

সভায় সনাক এর পক্ষ থেকে ‘জলবায়ু অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে সুপারিশমালা প্রদান করা হয়। সুপারিশগুলো হলো: প্রতিষ্ঠানের সেবা সংক্রান্ত নাগরিক সনদ স্থাপন করা; দাত্বিপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ ও তার নামের বোর্ড জনসম্মুখে স্থাপন; তথ্য প্রদানে রেজিস্টার অনুসরণ করা; সেবা বিষয়ক তথ্যপত্র প্রকাশ ও প্রচার করা; অভিযোগ ও পরামর্শ বাক্স স্থাপন; অভিযোগ নিরসন কমিটি গঠন ও গৃহীত অভিযোগ যথাসময়ে নিষ্পত্তি করণ; অভিযোগ গ্রহণ ও নিরসন রেজিস্টার চালু করা; যে কোন অভিযোগ জানানোর জন্য হট নাম্বার চালু করা; বিভিন্ন কমিটিতে নারী সদস্য অন্তর্ভুক্তিকরণ; সেবার ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার প্রদান; প্রকল্প এলাকায় গণশুনানী আয়োজন করা; প্রকল্পের বাজেট, কাজের বিবরণ এবং সময়কাল উল্লেখ পূর্বক বোর্ড স্থাপন; প্রকল্পের চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয় জনসাধারণের মধ্য থেকে যোগ্যতা অনুসারে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান ইত্যাদি।

অধিপরামর্শ সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, (সামাজিক বনবিভাগ) মো. আবুল কালাম, সচেতন নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ হাবিবুর রহমান, আনোয়ার জাহিদ, সদস্য সাইফুর রহমান মিরণ, এলজিইডির সহকারি প্রকৌশলী সৈয়দ মাইনুল মাহমুদ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল-এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহরুখ সোহেল, সেভ দ্য চিল্ড্রেন এর সিনিয়র ম্যানেজার মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন এর প্রকল্প সমন্বয়কারি মো. নাসির উদ্দিন, বেলার সমন্বয়কারি লিংকন বায়েন, ব্র্যাক জেলা প্রতিনিধি রিপন চন্দ্র মন্ডল প্রমূখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার-সিই মো. মনিরুল ইসলাম। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন টিআইবি’র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার-অর্থ ও প্রশাসন জুয়েল রানা ও সনাক এর ইয়েস সদস্যবৃন্দ।