জাল এনআইডি-ড্রাইভিং লাইসেন্স চক্র: গ্রেপ্তার ৫

জাল এনআইডি-ড্রাইভিং লাইসেন্স চক্র: গ্রেপ্তার ৫

রাজধানীতে প্রায় একযুগ ধরে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স জালিয়াতিতে সক্রিয় একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। চক্রের আরেক সক্রিয় সদস্য ওমরা করতে দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এই চক্র মূলত বাইক রাইডারদের এসব ভুয়া নথি তৈরি করে দিতেন। যা প্রাথমিকভাবে দেখে বোঝার কোনো উপায়-ই থাকত না।

সোমবার রাজধানীর মালিবাগ, বাসাবো, শাহজাহানপুর ও কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- গোলাম মোস্তফা (৬০), জালাল বাশার (৫৪), মুসলিম উদ্দিন (৬৫), মিনারুল ইসলাম মিন্নি (২২) এবং তারেক মৃধা (২১)।

মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোলাম মোস্তফা এই চক্রের ‘হোতা’, গত এক যুগ ধরে তিনি এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে আসছেন। এ ছাড়া এদের আরেক সক্রিয় সদস্য বর্তমানে ওমরা করতে দেশের বাইরে রয়েছেন। তারা এমনভাবে এসব কার্ড তৈরি করত, প্রাথমিকভাবে ধরার কোনো সুযোগ থাকত না।

বাইক রাইডাররা ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, রোহিঙ্গারাও এই চক্রের কাছ থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে র‍্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন বিআরটিএ এবং নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকত এবং লোকজনকে ‘টার্গেট’ করে তাদের কারবার চালাত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা প্রচার চালাত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড র‍্যাবের সাইবার মনিটরিং সেলের নজরে এলে তারা অনুসন্ধান শুরু করে এবং তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে বাহিনীর সদস্যরা।

কমান্ডার আল মঈন বলেন, ‘যারা দ্রুত চাইতেন, তাদের টার্গেট করে অবস্থাভেদে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে দিত এই চক্রটি। অ্যাপ ভিত্তিক রাইড শেয়ারের বাইক চালকেরা এই চক্রের প্রধান গ্রাহক। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেকে প্রতারিত হলেও করার কিছু ছিল না। আবার অনেকে জেনে শুনে টাকা দিয়ে দ্রুত এসব জাল কাগজ সংগ্রহ করত।’

চক্রের হোতা গোলাম মোস্তফা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে এসব কার্ড সরবরাহ করত চক্রটি। মাসে ৩০ থেকে ৫০টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তারা সরবরাহ করে আসছিল।

আল মঈন বলেন, এইচএসসি পাস গোলাম মোস্তফা এক্স-রে মেশিনের টেকনিশিয়ান। ২০১০ সালের দিকে তিনি ‘প্রতারণার ব্যবসায়’ জড়িয়ে পড়েন। একই অপরাধে বহুবার তিনি জেল খেটেছেন। চক্রের সদস্যদের কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ দিতেন মোস্তফা এবং কয়েক বছর পরপর সদস্যদের পরিবর্তন করতেন।