ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হোন

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হোন

বর্ষা শেষ হলেও ডেঙ্গুর আক্রমণ কমছে না। সারা দেশের সঙ্গে বরিশালেও বাড়ছে ডেঙ্গ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত অক্টোবর মাসে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫২৯জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। নভেম্বর মাসে ১৪ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১৪৯জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশে ডেঙ্গুর আক্রমণে দিশেহারা হচ্ছে মানুষ। অন্যদিকে ডেঙ্গুর আক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে পৃথক ওয়ার্ড না থাকয় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। অন্যদিকে প্লাটিলেট কমে গিয়ে মারাত্মক অবস্থা দেখা দিলেও তাদের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই বরিশালের হাসপাতলে। এমন বাস্তবতায় ডেঙ্গু থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে সচেতনতা।

বরিশালসহ গোটা দেশে নুতন আতংক হচ্ছে ডেঙ্গু। এডিস মশার উপদ্রব এই শঙ্কার মধ্যে ফেলেছে। যদিও বরিশাল সিটি করপোরেশন মশার উপদ্রব ঠেকাতে সর্বত্র ওষুধ দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখছে। তারপরও  ভয় ও শঙ্কা কমছে না। যদিও বরিশাল মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী তেমন একটা নেই। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বেশিরভাগ ঢাকা কিংবাং আসপাশের জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছে। তারপরও বরিশাল এই ঝুঁকির বাইরে নয়। সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রভাব চিন্তিত করে তুলছে চিকিৎসকসহ সাধারণ নাগরিকদের। নানা সচেতনতা মূলক কর্মসূচি চলছে দেশজুড়ে। তারপরও মৃত্যু ভয় যেন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

ডেঙ্গু সম্পর্কে আমাদের এখনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। আমরা মনে করি মশায় কামড়ালেই ডেঙ্গু হয়। যে কোন মশার কামড়ে ডেঙ্গু ছড়ায়। তাই আমরা ঝোপঝাড় ময়লা আবর্জনা পষ্কিার করতে ব্যস্ত হয়ে পরি। তাতে মশার উপদ্রব কিছুটা কমেও বটে। কিন্তু তাতে কি ডেঙ্গুর প্রভাব কমবে বলে মনে হয়? কমবে না। কারণ ওই মশা ডেঙ্গু ছড়ায় না। বিশেষ করে নগর ভবনের স্বাস্থ্য বিভাগ অব্যই জানে। তারা ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিভাবে ডেঙ্গু ছড়ায় সেটা নগরবাসীকে জানাতে হবে। কেবল ঝোপঝাড়, ময়লা, নর্দমায় ওষুধ ছিটালে ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। আমাদের মনে হচ্ছে, কিভাবে ডেঙ্গু ছড়ায় সেটা নগরবাসী সেভাবে জানে না, কিংবা জানলেও মানে না। এডিস মশার জন্ম ইতিহাস জানা থাকলে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হতো। 

এডিস মশার বিস্তার ঝোপঝাড় কিংবা ময়লা আবর্জনা, নর্দমায় হয় না। এডিস মশা হচ্ছে অনেকটা সৈয়দ কিংবা কুলিন মশার প্রজাতি। তাদের আভিজাত্য বজায় রাখতে তারা স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করে। তাও আবার ¯্রােত আছে এমন জলাশয় নয়। এডিশ মশা বিস্তার ঘটে বাড়ির ছাদ কিংবা আঙিনায় রাখা টবের জলে, বালতিতে কয়েকদিন ধরে জমানো জলে। ডাবের খোসায়। তাই তারা সহজেই আক্রমণ করতে পারে। ভয়ের বিষয় হচ্ছে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানো এডিস মশা রাতে নয়, দিনে আক্রমণ করে। ফলে ডেঙ্গু নামক ভাইরাসে অনায়াসেই আক্রান্ত হই আমরা। তাই বলতে হয়, এডিশ মশার উপদ্রব কমাতে সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা বড়াতে হবে। আমাদের বাড়ির আঙিনায় স্বচ্ছ জল যাতে না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে। একই সঙ্গে বাড়ির ছাদে, টবে যাতে জল না জমে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে ডেঙ্গু ছড়াতে পারবে না। আমরা মুক্ত হবো ডেঙ্গু নামক ভাইরাসের আক্রমণ থেকে।