ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। মেধার ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আদালত সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার বিধান বাতিল করা কেন নয়, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছেন। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আশরাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্টদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষারসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী। এর আগে ৫ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল। নোটিশে বলা হয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কোটা বহাল রেখে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বাতিল করতে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় ১০ নভেম্বর রিট দায়ের করা হয়।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব রিটে উল্লেখ করেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সন্তানরা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে না। তাদের ছেলে-মেয়েদের ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বর পেলেই ভর্তির সুযোগ রয়েছে, যা সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
রুলে হাইকোর্ট জানান, "পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হতে হবে। পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা সংবিধানের ২৮ (০৪) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।"
রিটকারীরা বলেন, "খেলোয়াড় কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের কোটা সংবিধানে সংজ্ঞায়িত পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই এটি বাতিল করা উচিত।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন ও শিক্ষা) এবং রেজিস্টারকে বিবাদী করে দায়ের করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিশের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটার বৈধতা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। রিটকারীদের মতে, পোষ্য কোটার বিধান মেধাবীদের প্রতি অন্যায় এবং এটি বাতিল করা সংবিধানের মৌলিক অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।