দোষী হই তবে আমি পদত্যাগ পত্র দিয়ে চলে যাব-মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ

দোষী হই তবে আমি পদত্যাগ পত্র দিয়ে চলে যাব-মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, অপরাধ না করেও আজ আমি অপরাধী। আমি আজ লজ্জিত, আমি যদি অপরাধী হই তবে বরিশালের এত বড় একটা দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার আমার নাই। আমি পদত্যাগপত্র দিতে চেয়েছি, কিন্তু আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে দিই নাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই, একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাই। আর আমি যদি অপরাধী হই তাহলে আমি এই গুরুদায়িত্ব থেকে সরে যাব।

বৃহস্পতিবার বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আইর টকশোতে তিনি এসব বলেন। 

মেয়র বলেন, আমি দুর্নীতিমুক্ত বরিশাল সিটি করপোরেশন গড়ে তুলেছি। এখানে নেই কোনো টেন্ডারবাজি, মারামারি। আমি নিজে জীবনে অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছি। তাই আমি আমার কর্মচারীদের দুঃখ বুঝি। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অনুদান না পেলেও রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছি। বিসিসির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন প্রদান করছি। আজ আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বরিশাল সিটি করপোরেশন একটি পরিচ্ছন্ন সিটি করপোরেশন।

মেয়র সাদিক বলেন, আমি লজ্জা পাই এই কারণে, একজন মেয়র হয়ে বরিশাল সদর উপজেলা চত্বরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজেকে মেয়র পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আমার ওপর গুলি করেছে। আমার নেতাকর্মীরা আমাকে সেখান থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। আজ আমার নেতাকর্মীরা হাসপাতালের বেডে, অথচ সরকার ক্ষমতায় থাকতেও আমি নেতাকর্মীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারিনি।

তিনি বলেন, ইউএনওর বাসার ঘটনা সময় যারা বরিশালে ছিলেন না তাদেরও আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ আরো বেশ কয়েকজন আছে। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তৃতীয় পক্ষ যারাই থাকুক না কেন, তাদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আর এতে যদি আমি নিজেও দোষী হই তবে আমি পদত্যাগ পত্র দিয়ে চলে যাব।

অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, বরিশাল বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন না, এটি বাংলাদেশেরই একটি অংশ। সারা বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারাই আজ জয় বাংলার স্লোগান দিচ্ছে। তারা মনে করে দল আর প্রশাসন এক সঙ্গে কাজ করছি। এখন রাষ্ট্র, দল, সরকার একাকার হয়ে গেছে। ভোটের সময় সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা সেদিন পাঁচজন মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জন করেছিলাম। আজ রাজনীতিবিদরাই আমলাদের নিয়ে কথা বলছে।

তবে ইউএনওর বাসভবনের ঘটনা নিয়ে তিনি সরাসরি কিছুই বলেনি।বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের নিয়মিত রুটিন ওয়ার্কের কাজ হিসেবে সেদিন উপজেলা পরিষদের চত্বরে গিয়েছিল বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে কেউ হামলা করেনি। সেদিন হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইউএনও নিজেই এর সঙ্গে জড়িয়েছে। তিনি নিজে আনসারের অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছে। আমরা এর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।

বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদে ব্যানার অপসারণ করাকে কেন্দ্র করে পুলিশ , আনসার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে হয়।