বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ জন কর্মকর্তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বিভিন্ন পদ মর্যদার ১২ জন কর্মকতাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাতের মধ্যে ওই ১২ জনের হাতে সিটি করপোরেশনের অফিস আদেশ পেঁছে দেয়া হয়েছে। এর আগে তাদের কেউ কেউ সাময়িক বরখাস্ত এবং বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। সতর্ক করার পরও সংশোধন না হওয়ায় তাদের চাকুরী থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি দেয়ার কথা বিসিসির অফিস আদেশে উল্লেখ রয়েছে।
গত ১৯ জুলাই বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদ ওই ১২জন কর্মকর্তার অব্যাহতি আদেশে সাক্ষর করেন। এর ১০ দিন পর ২৯ জুলাই চিঠিতে অফিস স্মারক নম্বর দেয়া হয়। স্মারক নম্বর দেয়ার ১৫ দিন পর গত বৃহস্পতিবার অফিস সহকারীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের হাতে হাতে অব্যাহতির চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সাময়িক বরখাস্ত কিংবা ওএসডি হওয়ার আগে কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে সতর্ক করলেও নিজেকে কোনরূপ সংশোধন না করে একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করায় সিটি করপোরেশনের আর্থিক ক্ষতিসহ ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় গত ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশনের চতুর্থ পরিষদের নবম সাধারণ সভায় ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ পূর্বক নির্দেশক্রমে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হলো। এই আদেশ জনস্বার্থে অবিলম্বে কার্যকর হবে। অফিস আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির, নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মনিরুল ইসলাম স্বপন, সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম টিপু, উপ-সহকারি প্রকৌশলী কমল কৃষ্ণ দাস, চিফ এ্যাসেসর মুশফিক আহসান আজম, সম্পত্তি শাখার স্টেট অফিসার মাহবুবুর রহমান শাকিল, জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল, সহকারি বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মইন উদ্দিন, আইন সহকারি মো. রফিকুল ইসলাম, হিসাব সহকারি মো. সালাম সরদার, হাটবাজার শাখার স্টল সহকারি আতাউর রহমান। তারা সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। ৮ বছর থেকে ২৮ বছর পর্যন্ত চাকুরীর বয়স হয়েছিলো তাদের।
এ বিষয়ে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন অব্যাহতি পাওয়া বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মতিউর রহমান।
তবে অব্যাহতিপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, অফিস আদেশে ৯০ দিনের আগাম বেতন প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের অনেকের ৮ থেকে ৯ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন পাবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
অব্যাহতি পাওয়া আরেকজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, কর্তৃপক্ষের সাক্ষর করার ৩ দিনের মধ্যে স্মারক নম্বরসহ চিঠি প্রদানের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চিঠিতে সাক্ষরের ১০দিন পর স্মারক নম্বর দেয়া হয়েছে। এর ১৫ দিন পর অব্যাহতিপ্রাপ্তদের হাতে হাতে চিঠি পৌঁছানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিসিসির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস ১২ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ১২ জন কর্মকর্তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়ায় বিসিসির বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওএসডি) দায়িত্বে নিযুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে চাকুরী হারোনোর আতংক দেখা দিয়েছে।