বরিশালে প্রেমিকার আসার খবরে পালিয়েছে বর

বিয়ে বাড়িয়ে প্রেমিকার উপস্থিতির খবর পেয়ে পালিয়েছে বর। আর প্রেমিকার অভিযোগ শুনে খোদ কনের পরিবারই বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করে দিয়েছে।
সেইসাথে প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি পরবর্তীতে কনের বিয়ের আয়োজনে সকল সহযোগীতা করার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয়রা ।
আজ শুক্রবার (২০ মে) দুপুরে বরিশাল শহরতলীর চরআবদানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন আগে তাদের গ্রামের ১৮ বছরের এই মেয়ের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয় পার্শবর্তী মহাবাজের পুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দিপুর ছেলে মৃদুলের সাথে। যথা নিয়মে আজ কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জুমআর নামাজের পর বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া শেষে কনেকে বরের হাতে তুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবার।
কিন্তু জুমআর নামাজের আগে বর মৃদুলের বাড়ির পাশের এক মেয়ে তার বোন ও মাকে নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়। এসময় ওই মেয়ে নিজেকে বর মৃদুলের প্রেমিকা বলে দাবি করে, কনেকে শারিরীকভাবে লাঞ্চনা করার পাশাপাশি হইহুলোর বাধিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা এসে ওই মেয়ের অভিযোগ শুনে এবং কনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।
স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মারুফ হোসেন জানান,হট্টগোল হওয়ার পর কনের বাড়ি থেকে লোক এসে আমাকে ডেকে নেয়। পরে বর এর স্বজনদের সামনেই ওই মেয়ে অর্থাৎ মৃদুলের প্রেমিকা নিজের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে। দীর্ঘ সাত থেকে সাড়ে ৭ বছরের প্রেমসহ অন্তরঙ্গ সম্পর্কের কথাও প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রমাণসহ ওই মেয়ে তুলে ধরে।
তিনি বলেন, কনে বাড়িতে প্রেমিকার আসার পর থেকে মৃদুলের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি, এককথায় মৃদুল পালিয়ে যায়। যদিও প্রেমিকা তরুণীর দাবি মৃদুলই তাকে এসএমএস দিয়ে এখানে আসতে বলেছে এবং এখান থেকে তাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছে। পরবর্তীতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কনের বাবা জাহাঙ্গীরের সাথে আলোচনা করে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
কনের বাবা, তার মেয়েকে মৃদুলের সাথে বিয়ে না দেয়ার কথা বর পক্ষকে জানিয়ে দেয়। পরে বর পক্ষের লোকজনসহ কিছু অতিথি না খেয়েই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। যদিও দরিদ্র কনের বাবা এক-দেড়শত মেহমানের খাবারের আয়োজন করেছিলো।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, এমন ছেলের সাথে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কনের বাবা। সাথে সাথে বিয়ের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। যদিও কনের কোন দোষ ছিলো না, বর ও তার পরিবার পেছনের এসব বিষয়গুলো গোপন রেখে বিয়ের আয়োজন এগিয়ে নিয়ে যায়। আর এসব কারন বিবেচনা করে কনের পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজনে সার্বিক সহযোগীতা করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সেইসাথে সু-বিচার পেতে মৃদুলের প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। তখন ওই মেয়ে ও তার পরিবার থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
আর কাউনিয়া থানা পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।