বরগুনার ২০ গুণী প্রবীণ শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে সম্মাননা

যেখানেই বড় কোন কীর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন হত সেখানেই ডাক পড়তো সচিন্দ্রনাথ সমাদ্দারের। বরগুনা বরিশালসহ বাংলাদেশের অনেক জেলায় বড় বড় কীর্তন অনুষ্ঠানে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেছেন তিনি।
হরেক তালে তবলা বাজাতে বিকল্প নেই তার। ৪৫ বছর ধরে তবলা বাজিয়ে সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বরগুনার উদীচী শিল্প গোষ্ঠীর নিবেদিত প্রাণ সদস্য ছিলেন সচিন্দ্রনাথ সমাদ্দার। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে খুব বেশি এগোয়নি তার পড়াশোনা।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করে বরগুনা জিলা স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করেন তিনি। বরগুনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একজন সচিন্দ্রনাথ সমাদ্দারের অবদান অপরিসীম।
সচিন্দ্রনাথ সমাদ্দারের মতো আরও অনেক সাংস্কৃতিক কর্মী রয়েছেন যারা স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নে ছিলেন নিস্বার্থ কর্মী। নিজস্ব চিন্তাভাবনা আর নানাবিধ সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বাঙালি জাতিসত্ত্বার বিকাশে। অথচ সেসব শিল্পীদের অধিকাংশই নিভৃতে নিরালায় থেকে যান। নানা বঞ্চনা আর গঞ্জনা নিয়ে সকলের অগোচরে তাদের অনেকেই এক সময় হারিয়ে যান কালের স্রোতে। গুণের কদর না থাকলে যেমন গুণীজন জন্মায় না। তেমনি শিল্পীদের সমাদর না হলে সমাজে গুণী শিল্পীও তৈরি হয় না।
তাই স্থানীয় গুণী শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মূল্যায়নে বরগুনার ২০ জন প্রবীণ শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মানা প্রদান করে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি।
সোমবার (০৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এসময় প্রত্যেককে ক্রেস্ট, পদক এবং সনদসহ ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এছাড়াও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত ঋত্বিক নাট্যপ্রাণ লিয়াকত আলী লাকী।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বরগুনার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাড. মো. শাহজাহান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাড. ভূবন চন্দ্র হাওলাদার, জেলা শিল্পকলা একাডেমি বরগুনার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মো. মুনিরুজ্জামান, জেলা কালচারাল অফিসার কাজী কামরুজ্জামান প্রমুখ।