সোনাদিয়া দ্বীপ, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের এক স্বর্গরাজ্য, এখন জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবৈধ দখলদারিত্বের কবলে পড়েছে। এই দ্বীপটি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দ্বীপের ভারসাম্য হারানো, প্যারাবন নিধন এবং চিংড়িঘের নির্মাণের মত কর্মকাণ্ড চলছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোনাদিয়া দ্বীপের ১৫ হাজার একরের বেশি প্যারাবন কেটে অর্ধশতাধিক চিংড়িঘের নির্মাণ করা হয়েছে। এধরণের অবৈধ দখলের পিছনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের নেতাদের নাম এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের পতনের পর স্থানীয় নেতারা এসব ঘেরের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন এবং নতুন ঘের নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত করছেন।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্যারাবন ধ্বংসের কারণে শুধু সোনাদিয়া দ্বীপ নয়, আশপাশের মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপও এখন জলোচ্ছ্বাস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকিতে রয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম শুধুমাত্র পরিবেশের জন্যই নয়, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকাও বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফাইজুল কবিরের দায়ের করা মামলার পরেও দখলদারদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিগত বছরগুলোতে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সোনাদিয়া থেকে উপকূলীয় বনবিভাগের অফিস সরিয়ে দেয়ার পর থেকেই প্যারাবন ধ্বংসের অভিযান শুরু হয়।
বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাগুলো সোনাদিয়া দ্বীপের এই বিপর্যয় ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, দীর্ঘদিনের অবৈধ দখলদারিত্ব এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
সব মিলিয়ে, সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশ পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এর সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ।