৮ বছর পর বরগুনা জেলা আ.লীগের সম্মেলন আজ

৮ বছর পর বরগুনা জেলা আ.লীগের সম্মেলন আজ

অবশেষে ৮ বছর পর বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলন আজ বুধবার সকাল ১০ টায় বরগুনা সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে পোষ্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে শহর। পদপদবি চেয়ে পোস্টার দিয়েছে অনেকে। শীর্ষ পদে এবার একাধিক প্রার্থী রয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জানা যায়, বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর। দীর্ঘ ৮ বছর পর অস্টম ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে এবার সভাপতি পদে দুইজনের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান সভাপতি ও সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব মৃধা।

সাধারণ সম্পাদক পদে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: জাহাঙ্গীর কবীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরগুনা পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক বরগুনা কলেজের সাবেক ভিপি গোলাম সরোয়ার টুকু।

 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি, প্রধান বক্তা হিসেবে থাকছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। সভাপতিত্ব করছেন, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় আছেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরগুনা জেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: জাহাঙ্গীর কবীর। 

 

ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু বলেন, আমি দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। দলকে সুসংগঠিত করেছি। দলের অধিকাংশ নেতা কর্মিরা আমাকে সভাপতি হিসাবে এখনও দেখতে চায়। দলের নেতা কর্মিদের বাইরে আমি নই। দল আমাকে চাইলে আছি। দলের অনেক নেতা সভাপতি হতে পারেন। আওয়ামীলীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। দলের অনেক নেতা কর্মি রয়েছেন। যে কেহ প্রার্থী হতে পারেন। দল যাকে যোগ্য মনে করবেন তিনিই সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হবেন। 

সভাপতি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব মৃধা বলেন, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা 

আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। বরগুনায় বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমি প্রথম প্রতিবাদ করে বছরের পর বছর কারাবন্দি ছিলাম। স্বৈরাচারী সরকার, চারদলীয় জোট সরকার, এক-এগারোর সরকারের আমলেও আন্দোলন সংগ্রাম করেছি৷  সীমাহীন নির্যাতন কারাজীবন ভোগ করেছি।

প্রায় তিন যুগ  বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে আছে। সম্মেলনে আমি সভাপতির পদ প্রার্থনা করব। 

 আমি বিশ্বাস করি মাননীয় সভানেত্রী ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ আমার সততা ত্যাগ ও  নিষ্ঠার মূল্যায়ন করবেন।

বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, আমি দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। দলের জন্য আমার ত্যাগ কতটুকু তা মাননীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান অতিথি সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল ভাই জানেন। আমি স্বচ্চ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। দল যখন যাকে মনোনয়ন দিয়েছে আমি তার পক্ষে কাজ করেছি। রাজনীতি করতে গিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমি ও আমার পরিবারের কেহ অপরাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। জাতির পিতার সঙ্গে আমি রাজনীতি করেছি। দল আমাকে মূল্যায়ন করবে এটা আমার বিশ্বাস।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা বলেন, গত ৮ বছর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। দলের নেতাদের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদটি চাইব। দল সিদ্ধান্ত নিবে কাকে সাধারণ সম্পাদক করবেন। আমি সাধারণ সম্পাদক হলে দলের নেতা কর্মিদের নিয়ে সবার কাছে গ্রহন যোগ্য হয় তেমন একটি কমিটি উপহার দেব। অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, আমি গত সম্মেলনেও  সাধাররণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। ৮ বছর পর সম্মেলন হচ্ছে। এবারও আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। আমি আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। আমি বরগুনা কলেজের ভিপি ছিলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম। দীর্ঘ বছর দলের হয়ে কাজ করেছি। আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হলে প্রবীন নবীনদের নিয়ে সুন্দর একটি কমিটি উপহার দেব। 

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ১৯৭৫ থেকে আমরা আওয়ামী লীগের জন্য, জনগণের জন্য সংগ্রাম করেছি। এখন আমরা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পড়েছি। আমাকে সাধারণ সম্পাদক পদ দিলে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সুন্দর ও গ্রহন যোগ্য একটি কমিটি উপহার দেব।