বিচারপতি নাজমুল আহসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা

বিচারপতি নাজমুল আহসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান মিজানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশালে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 
গতকাল প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিচারপতি নাজমুল আহসান মিজান স্মৃতি সংসদের আয়োজনে  শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্তানে কবর জিয়ারত, দোয়া ও মোনাজাত এবং সন্ধ্যয় বরিশাল অশ্বিনী কুমার হলে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
স্মরণ সভায়  উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম বিপিএম (বার), আইন ও শালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এ্যাড. জেড আর খান পান্না । পাশাপাশি পারিবারিকভাবে ঢাকা ও বরিশালে বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর ৮ জানুয়ারি এফ আর এম নাজমুল আহসান মিজানসহ মোট চারজন বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগপ্রাপ্ত বাকি তিন বিচারপতি হলেন- বোরহান উদ্দিন, এম ইনায়েতুর রহিম ও কৃষ্ণা দেবনাথ। পরদিন ৯ জানুয়ারি শপথ নেন ৩  বিচারপতি। কিন্তু করোনা সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় শপথ নিতে পারেননি বিচারপতি নাজমুল আহসান মিজান। ১৯৮৬ সালের ১৮ মার্চ বরিশাল জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় কাজ শুরু করেন নাজমুল আহসান মিজান। পরে তিনি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। কিছুদিন তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান নাজমুল আহসান মিজান। ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি বিচারপতি পদে স্থায়ী হন। বিচারপতি হিসেবে তিনি অনেকগুলো ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেন। বিশেষ করে ‘দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সব অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ‘জয়বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করে বক্তৃতা শেষ করা, ‘বিচার আদালতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো,’ মুক্তিযোদ্ধাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্বোধন, বিনা দোষে কারাগারে আটকে থাকা জাহালমকে মুক্তির রায়গুলো উল্লেখযোগ্য। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারপতি পদে নিয়োগ পাওয়ার আগে আইন পেশার পাশাপাশি দীর্ঘসময় নাজমুল আহসান মিজান বাম ধারার রাজনৈতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বরগুনা ও স্বরূপকাঠির পেয়ারাবাগান এলাকায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। নাজমুল আহসান মিজান ১৯৫৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ডাইয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আনোয়ার হোসেন তালুকদার প্রথম জীবনে স্কুল শিক্ষক ছিলেন। পরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তা হিসেবে চাকরি করেন। তার মায়ের নাম জাহানারা বেগম। তার শৈশব কাটে মেঘনা তীরের হিজলায়। পরে বাবার চাকরি সূত্রে কিছুদিন বসবাস করেন বরগুনার নলীতে। সেখানকার নলী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে এসএসসি পাস করেন। বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এইচএসসি, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ (বিএম) থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি এলএলবি পাস করে আইন পেশায় যোগ দেন।