মর্মান্তিক ১৫ আগষ্ট - খান আলতাফ হোসেন ভুলু

মর্মান্তিক ১৫ আগষ্ট - খান আলতাফ হোসেন ভুলু

আমার বাড়ী বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জের গোমা কৃষ্ণকাঠীতে। আমার বাবা মোঃ আবদুর রশীদ খান চাইতেন ছেলেরা যেন লেখাপড়া করে। সেজন্য ভর্তি করে দিয়েছিলেন তৎকালীন সময়ে বরিশালের নামকরা এ,কে স্কুলে। এই স্কুলে পড়েই আমার রাজনৈতিক চেতনার স্ফুরণ ঘটে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে প্রবল এক ব্যক্তিত্ব। ১৯৬০-এ দশকের দ্বিতীয় ভাগে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির স্বাধীনতার ব্যক্তি-প্রতীক। সে সময়ে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনা বিশেষ করে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড আমার জীবনে প্রভাব ফেলে। ষাটের দশকের এই রাজনৈতিক আকাঙ্খা বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতির ছিল প্রবল জোয়ার। আমিও এই জোয়ারে ভেসে গেলাম। এর পর এল ৬ দফা। বাঙালির মুক্তির সনদ। আমরা তৈরী হতে লাগলাম সকল গোলামির জিঞ্জির ছিড়ে ফেলতে।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু লাহোরে ৬ দফা ঘোষণা করেন। আমি তখন এ. কে. স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র। ৬ দফার প্রতিটা লাইন যেন আমার মণিকোঠায় গেথেছিল। আমি ভীষণ ভাবে উদ্দিপ্ত হয়ে পড়ি। ১টা চুঙ্গা নিয়ে পাড়ায় মহল্লায় রাস্তাঘাটে ৬ দফার পক্ষে জনমত গঠন করতে বেড়িয়ে পড়তাম। এর আগেই ১৯৬২ সালে আমি ছাত্রলীগে যোগদান করি। এ.কে. স্কুলের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বও লাভ করি। মানুষের মনের মধ্যে তখন স্বাধীনতার আকাঙ্খা খুব প্রবল ছিল। বক্তৃতা ছাড়াও মাঝে মাঝে গণ সংগীত দিয়ে আমরা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতাম। আক্কাস হোসেন, আবু আল সাইদ নান্টু, ভবানি সাহা সহ অনেকেই গনসংগীতের সাথে যুক্ত ছিলেন। আমার একটা সাইকেল ছিল তা নিয়ে বের হতাম প্রচারাভিযানে। '৬৬ সালের ৭ জুন হরতালের ডাক এলো- সাথে ইশতেহার 'পূর্ব বাংলা রুখে দাড়াও’ ‘স্বায়ত্বশাসন নয় স্বাধীনতা’ এ. কে. স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে একটি বিরাট মিছিল বের করি। সেদিন বরিশালের রাজপথে একটি সাইকেল পর্যন্ত বের হয়নি। পুলিশ এসময় কয়েক হাজার লিফলেট সহ আমাকে ও ইমান আলীর ছেলে মাহাবুবকে গ্রেফতার করে। আমাদের নামে রাস্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। সে মামলা অবশ্য টেকেনি। জেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রচার সম্পাদক অবদুল মমিন সাহেবকে পাই। কিছুদিন পরে অবশ্য আমার মুক্তি মেলে। এটা ছিল আমার জেল জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা।



১৯৬৭ সালে আমি সরকারী ব্রজমোহন কলেজে ভর্তি হই। সে সময়ে এই কলেজটি শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুই ছিল না- তৎকালীন বি.এম. কলেজের বহু ছাত্রনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও নেতৃত্ব দিয়েছিল। আমি ১৯৬৭ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পর বি.এম কলেজে এ.জি.এস. নির্বাচিত হই। একই কলেজে পরবর্তী বছর জি.এস. ও ১৯৬৯ সালে ভি.পি নির্বাচিত হই। সে সময়ের গণ আন্দোলনে বি.এম. কলেজের ভূমিকা ছিল গৌরবজ্জল। ১৯৬৯ সালে গণ আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। প্রতিদিনই বি.এম. কলেজের ছাত্রদের নিয়ে মিছিল সমাবেশ বের হতো। মিছিল কলেজ থেকে সোজা অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এসে শেষ হতো। ১৯৬৯ সালের ২৮ জানুয়ারী ১৪৪ ধারা ভংগ করে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিল সদর রোডে আসবার সাথে সাথে তৎকালীন ইপিআর (ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস) গুলী করে। গুলীতে এ. কে. স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র আলাউদ্দিন নিহত হয়। আরো বহু ছাত্র জনতা আহত হয়। এ্যাডভোকেট সুবোধ দে’র ছেলে সুজিত দে’র পায়ে গুলী লাগে। পা কেটে ফেলতে হয়। পুলিশের গুলী বর্ষণের প্রতিবাদে বরিশালে পরদিন হরতাল পালিত হয়। চারিদিকে থমথমে অবস্থা। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। আমি বরিশাল জেলার সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলাম। এই সংগ্রাম পরিষদ বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালীদের আশু সংগ্রামের কথা প্রচার করতে থাকে। সে সময়ে বরিশালে বাটার গলির পিছনে ছিল ছাত্রলীগের অফিস। এই অফিসে ছাত্রদের মোটিভেশনাল পোগ্রামে আমি পেয়েছি-শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত, বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, তার ভাইয়ের ছেলে মনা ঘোষ, নলিনী দাশ, এমনকি মনোরমা বসু মাসিকেও। তারা ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হলেও দেশের ডাকে ছাত্র সমাজকে প্রস্তুত করতে এগিয়ে এসেছিলেন। সেদিনের এই দিনগুলি ছিল অসম্ভব উত্তেজনা পূর্ণ। প্রতিটি বাঙালি যেন চাইতেন পাকিস্তানি গোলামির নাগপাশ থেকে যে কোন উপায়ে মুক্তি পেতে। মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় আমি আমার এলাকা বাকেরগঞ্জে ফিরে যাই-সেখানে গিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেই। যুদ্ধে আমাদের বহু সাথিকে হারিয়েছি। বহু আত্বীয় স্বজন, পরিচিত জন পাকিস্তানি হামলায় শহীদ হন। 



১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট। আমরা থাকতাম দপ্তর খানার বাড়িতে। আমার একটা রেডিও ছিল, ভোড় ৬ টায় রেডিও অন করতেই ঘোষনা এলো-ডালিমের কণ্ঠস্বর ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। এরপর সাথে সাথে আরো ঘোষণা আসতে লাগল ‘মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে-এই ঘোষণায় প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। তখন জাসদের গণ বাহিনী, সিরাজ সিকদারের আন্ডার গ্রাউন্ড বাহিনী সক্রিয় ছিল; ভেবেছি এসব তাদের প্ররোচনা হতে পারে। কিন্তু রেডিওতে একের পর এক ঘোষণা ও কার্ফু দেয়ার ঘোষণায়-বুঝতে আর বাকী রইল না-বঙ্গবন্ধুকে ওরা হত্যা করেছে। আমার একটা লাইসেন্স করা পিস্তল ছিল এটা নিয়েই বের হলাম। তখন সারা শহর নিস্তব্দ। সদর রোডে তৎকালীন আর্যলক্ষী ব্যাংকের সামনে এসে দেখা পাই তকালীন আওয়ামী লীগ নেতা হেমায়েত উদ্দিন আহমেদের সাথে। তিনি আমাকে দেখেই জিজ্ঞাসা করলেন-কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম ছাত্রলীগের সবাইকে খবর দিতে হবে-বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে আমাদের রাজপথে নামতে হবে। উনি বললেন- বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে- মন্ত্রীসভার সদস্যদের হত্যা করেছে। বরিশালে ওরা সবাই জড়ো হয়েছে পেশকার বাড়িতে-ওরা এখনই এসে পড়বে- তোমাদের উপর যে কোন সময়ে হামলা করতে পারে। আমি বললাম- হামলা হোক-আর যাই হোক বঙ্গবন্ধুর হত্যার আমরা প্রতিশোধ নেবই। এর পর বর্তমান সশস্ত্র বাহিনী বোর্ড-যেখানে আওয়ামী লীগ আফিস ছিল সেখানে গিয়ে দেখি- কেশব বাবু ও কুট্টি মিয়া ভাড়াক্রান্ত হয়ে বসে আছে। ইতোমধ্যে মনসরুল আলম মন্টু, মুশফিকুর রহমান, শেখ মোবারক,তরুন দেব,জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. পিযুষ কান্তি দাস সহ নেতা কর্মীরা এসে গিয়েছে-আমরা একটি মিছিল বের করে বিবির পকুরের দিকে আসতেই পেশকার বাড়ির দিক থেকে একটি বিরাট, মিছিল লাঠি সোটা নিয়ে এগিয়ে এসে আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। এই মিছিলের নের্তৃত্বে ছিল আসম ফিরোজ, আক্কাস হোসেন, শওকত শরন্যামত, ফরিদ প্রমূখ। খুনী মোশতাকের সমর্থকরা আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর ছবি রাস্তায় এনে ভাংচুর করতে দেখা যায়। আওয়ামীলীগ অফিসে কেশব বাবু ও কুট্টি মিয়া আক্রান্ত হলেন। এই হামলাকারীরা শহরের যে সব দোকাটপাটে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিল সে গুলো টেনে নামিয়ে এনে ভাঙতে শুরু করে। সে সময়ে জাসদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরও এদের সাথে হাত মেলাতে দেখা যায়। হামলাকারীদের একাংশ বি.এম কলেজে প্রিন্সিপালের রুমে গিয়ে প্রিন্সিপাল এমদাদুল হক মজুমদারকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবিকে পদদলিত করে। এমনকি এই সমর্থকরা যারা আনন্দ উল্লাস করছিল তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে বগুরা রোডের একটি বাসায় প্রকাশ্যে নৃত্য করে পরে গোসল করে খিচুড়ি রান্না করে খেয়েছে। আমরা তকালীন বি.এম কলেজের ক্যান্টিন মালিকের বাড়িতে একটি গোপন মিটিং করি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়-১৯ তারিখ দক্ষিণাঞ্চলে একটি বড় মিছিল ও শো ডাউন করা হবে। তকালীন সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ছাড়াও রক্ষী বাহিনী, পুলিশের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করি। আমি আমার সাইকেলটি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ শুরু করি। ১৭ আগষ্ট সাইকেলে প্রচারণার সময় আমাকে সদর রোডে জেলখানার সামনে থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় গিয়ে দেখি আতাহার উদ্দিন দারোগা, রুস্তুম সরদার, সাজু, নুরু সহ আরো নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধরপাকড় বাড়ছিল। তৎকালীন এসপিকে আমাদের সাথে সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগে সাসপেন্ড করে এডিশনাল এসপি রাশেদ সাহেব কে দায়িত্ব দেয়া হয়। রাতে রাশেদ সাহেব থানায় এসে আমাদের আলাদা কক্ষে নিয়ে যান। এসময় তার নির্দেশে চলে অমানুষিক নির্যাতন। আমাকে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদ চলে। এক পর্যায়ে রাশেদ সাহেব চলে গিয়ে রাত আড়াইটায় পুনরায় ফিরে আসে। আমার চোখ কালো কাপড়ে বেধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ৩ দিন কোথায় কি করেছি- সেসব নিয়েই প্রশ্ন ছিল। আমি কারাগারে যাওয়ার পরই আরো বহু লোককে কারাগারে আনা হয়। এর মধ্যে প্রবীন বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, এ্যাড. শাহজাহান মিয়া, মানবেন্দ্র বটব্যাল, কাশীনাথ দত্ত, হরনাথ বাইন সহ অনেককে পেয়েছি। জেলে জাসদ ও সিরাজ সিকদারের সদস্যরা আমাদের উপর নির্যাতন চালাতো। এসকল ঘটনায় জেলে আমাদের সাথে জাসদের আসম রব, হাসানুল হক ইনু, শাহজাহান খান, ভোলার সিদ্দিক ও বিচ্চু আলম। তাদের সাথে মারামারিতে নুরু ও আমাকে ১ মাস সেল হয়। এর প্রতিবাদে ৮০ বছর বয়সী দেবেনদা জেলে আমরণ অনশন শুরু করে দেন। ৩ দিন অনশন চলার পরে তাকে আমরা বলি-তিনি যদি অনশন ভঙ্গ না করেন তাহলে আমরাও অনশন করব। দেবেন দা অনশন ভঙ্গ করতে রাজী হলেন।

জেলে দীর্ঘ ৩৪ মাস কারাগারে থাকার পর মুক্তি লাভ করি। জেল থেকে মুক্তি লাভ করার পর ফিরে এসে দেখি সর্বত্রই বঙ্গবন্ধুর ও আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তিরা ক্ষমতায় আসীন। আমার অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। আমি কপর্দক শূন্য হয়ে পড়ি। ১৯৭৮ সালের ১লা মে জেল থেকে মুক্তি লাভ করার পর দলীয় নির্দেশে সংসদ সদস্য পদে বাকেরগঞ্জে আমি নির্বাচন করি। আমার টাকা পয়সা ছিল না। পায়ে হেটে হেটে, সাইকেলে-নৌকায় চেপে আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছি। সেদিন ভোটে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হবার পরও ২ দিন পরে আমার ১০ হাজার ব্যালটে ডাবল সিল মেরে বিপক্ষ প্রার্থী রুহুল আমিন হাওলাদারকে জয়ী ঘোষনা করে দেয়া হয়। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনেও দল আমাকে নমিনেশন দেয়। সেদিন নজির বিহীন ভাবে ডিসি আজিজ আহম্মেদ ৫ দিন আগে ব্যালট বাকেরগঞ্জে পাঠিয়ে দেন। ব্যালট আগেই সিল মেরে ভর্তি করে রহুল আমিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। আজিজ আহম্মেদ ছিলেন এরশাদের আত্মীয়। এভাবেই তিনি ফলাফল পাল্টে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমাকে পরাজিত করাই শুধু নয় আমার গ্রামের বাড়ীতে হামলা করা হয়েছিল। ১২ বছর আমি আমার বাড়িতে যেতে পারিনি। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছিল। বরিশালের বি.এম কলেজ রোডের বাড়িতেও হামলা করা হয়। সন্তান সম্ভবা আমার স্ত্রী আতংকিত হয়ে পড়লে অ্যাবরেশন হয়ে পড়ে। আমি বঞ্চিত হই আরেকটি সন্তানের পিতৃত্ব থেকে। সেই থেকে আমার স্ত্রী দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। 

বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসের ‘গণতন্ত্র ছিল সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধন করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দুঃখী বাঙালির মুখে হাসি ফোটানো। সেই স্বপ্ন পূরণে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে একটি শোষণহীন সমাজভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। '৭৫ পরবর্তী কালপর্বে যে অপশক্তি বাংলাদেশকে পথভ্রষ্ট করতে চেয়েছিল তার গতিমুখ আবার বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আর একারণে আজ আমাদের দেশ উন্নয়নের মাপকাঠিতে সর্বাধিক সাফল্য অর্জন করছে। 

ষাটের দশক থেকেই বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগই ছিল আমার ধ্যান জ্ঞান। শত সংকট, আর বিরুদ্ধের প্রবল জোয়ারে এইদুটি আলোক বর্তিকা আমি ছেড়ে যাইনি। রাজনীতিতে এই দুই আলোক স্তম্ভই আমাকে পথ চলতে প্রেরণা যুগিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে-কিন্তু সেদিন যারা বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করেছে-তাকে অপমান করার জন্য বর্বতার পরিচয় দিয়েছে- নেতাকর্মীদের হামলা করেছে-আমি এর বিচার চাই, স্বাধীনতার জনককে আর কেউ কোনদিন যেন অপমান না করতে পারে। 
-জয়বাংলা।। জয় বঙ্গবন্ধু।। 


  লেখক: প্রাক্তন প্রশাসক, বরিশাল জিলা পরিষদ, বরিশাল, সিনিয়র সহসভাপতি- বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রিয় কমিটি এবং                                         এ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট।