শঙ্কায় দিন শেষ করল বাংলাদেশ

হাতে আছে আরও দুই দিন। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ৩৮৬ রান। কিন্তু বাকি আছে মাত্র ৭ উইকেট।
টাইগাররা যে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টেও হারতে যাচ্ছে, তা প্রায় নিশ্চিত। এখন দেখার বিষয়, চতুর্থদিনে কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে সফরকারীরা। নাকি ডারবান টেস্টের চতুর্থ ইনিংসের মতো আরেকটি ব্যাটিং বিপর্যয় অপেক্ষা করছে মুমিনুল হকদের জন্য, তা সময় বলে দেবে।
ইতোমধ্যে টাইগারদের ডোবানোর ইঙ্গিত দিয়ে স্বস্তিতে দিন পার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের দেওয়া ৪১৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ফের ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দিল বাংলাদেশি ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯.১ ওভার ব্যাট করেছে সফরকারী দল। তাতে স্কোরবোর্ড ২৭ রান জমা পড়তেই নেই তিন টপ-অর্ডার ব্যাটার।
অলৌকিক কিছ না ঘটলে প্রোটিয়াদের হাতে হোয়াইটওয়াশ হওয়া মোটামুটি নিশ্চিত মুমিনুলদের। ডারবান টেস্টে চতুর্থদিন দিন পর্যন্ত যা একটু লড়াই করেছিল; কিন্তু সেন্ট জর্জেস পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে তৃতীয় দিন পর্যন্ত কোনো লড়াই দেখা যায়নি টাইগারদের মধ্যে। ব্যাটে-বলে পুরো তিনদিন শাসন করল প্রোটিয়ারা।
পোর্ট এলিজাবেথেও যে বাংলাদেশ ধরাশায়ী হচ্ছে ইতিহাসের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার ইতিহাস অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৯৭ সালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ২৭১ রান করে জিতেছিল অজিরা। সেখানে বাংলাদেশের সামনে চারশ’ ঊর্ধ্ব টার্গেট!
আর সেই রানের চাপায় পড়ে যেন দ্রুত দায়িত্ব শেষ করতে চাইলেন মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হাসান শান্ত ও তামিম ইকবালরা। ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর বুদ্ধিটা ঠিকই কাজে লাগল দ. আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগারের।
ডারবানে ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করে যে প্রতিশ্রুতি জাগিয়েছিলেন জয়, তা যেন নিমিষেই হারিয়ে গেল। পরের তিন ইনিংসে তার সংগ্রহ মাত্র ৪ রান। আর পোর্ট এলিজাবেথে ‘ব্যাক টু ব্যাক’ ডাক। প্রথম ইনিংসে ওপেনার তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে প্রতি আক্রমণে ঘুরে দাঁড়ানোর চিন্তা করেছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে সেই কৌশল কাজে লাগল না।
তৃতীয় দিন মূলত হয়ে উঠল স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। সারাদিনে যে ১৪ উইকেট পড়ল তাতে স্পিনারদের শিকার ১৩টি।বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ ৩ উইকেট পেটে গেছে কেশব মহারাজ ও সাইমন হার্মারের পেটে। ১৩৯ রানে তৃতীয় দিন শুরু করা টাইগারদের শেষ ৫ উইকেটও ভাগাভাগি করে নেন এই দুই প্রোটিয়া স্পিনার। মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী দুর্দান্ত শুরু করলেও টাইগারদের প্রথম ইনিংস ২১৭ রানে শেষ করে দেন মহারাজ-হার্মার।
দ. আফ্রিকা চাইলে বাংলাদেশকে ফলোঅনে পাঠাতে পারত। কিন্তু তা না করে ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তারা। দ্রুত রান তোলে বড় লিডের দিকে ছুটতে থাকে সফরকারী দল। দ. আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে করেছিল ৪৫৩ রান।
বাংলাদেশের হয়ে কেবল লড়াইয়ে দেখা গেল তাইজুল ইসলামকে। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসের ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নেন এই স্পিনার। মেহেদি হাসান মিরাজ নিলেন ২ উইকেট।
আগামীকাল চতুর্থদিন ব্যাটিংয়ে নামবেন অপরাজিত থাকা মুমিনুল। সাম্প্রতিক সময়ে টাইগার অধিনায়কের ব্যাটের যা অবস্থা, তাতে বড় ইনিংস আশা করা যায় না বললেই চলে।