শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলন

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনসমূহ। দাবি না মানলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। 

শনিবার পৃথক কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানায় সংগঠনগুলো। শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে করে ছাত্রদল। সমাবেশে অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পাশাপাশি মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মাণের দাবি তোলেন তারা।

সমাবেশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের নেতৃবৃন্দ। বিক্ষোভ সমাবেশের সঞ্চালনা করেন ছাত্রদল ঢাবি শাখার আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান।
সমাবেশে ১২ জুনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া না হলে দুর্বার আন্দলোন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন ফজলুল রহমান খোকন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুল রহমান খোকন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় এক বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা বাস্তবায়ন করার কোন পদক্ষেপ আমরা লক্ষ্য করিনি। 

তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জাতিকে যেভাবে মেধাশূন্য করে রাখা হচ্ছে, তাতে একদিকে যেমন বেকারত্বের হার বাড়বে অন্যদিকে অনেক শিক্ষার্থী তাদের চাকরির বয়সসীমা হারিয়ে আজীবন বেকারত্বের পথ বেচে নিবে। তিনি শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসতে অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, করোনায় সবকিছু চললেও করোনার দোহাই দিয়ে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখেছে। সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

এদিকে, শনিবার বিকেলে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত টিকা প্রদান ও স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিতসহ তিন দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ। পরে একটি মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিক প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।  

সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন প্রমুখ। 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, অনলাইন ক্লাসে ৩০-৩৫ ভাগ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। দেশের বিরাট একটি অংশ যেখানে অবহেলিত সেখানে কিভাবে শিক্ষামন্ত্রী অনলাইন ক্লাসকে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাস্তবায়ন করতে চান?  

অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণাও শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত টিকা প্রদান করে স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। 

সমাবেশে ফয়েজ উল্লাহ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সমস্যা সৃষ্টি হবে, তা সম্ভব্য কোন সমাধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করেনি, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারগুলোর এমন অবস্থা যে সেখানে কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্ভব্য সমস্যার সমাধান নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবিও জানান তিনি।
  
সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বিপ্লবী যুব আন্দোলনের বিভিন্ন শাখার শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।