সাবেক মেয়র কামাল কারাগারের ফুল বাগানে কাজ করে শান্তি পাচ্ছেন

সাবেক মেয়র কামাল কারাগারের ফুল বাগানে কাজ করে শান্তি পাচ্ছেন

দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালকে কারাগারের ফুল বাগান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। ফুল বাগানে কাজ করে প্রশান্তি পাচ্ছেন তিনি। সেই হিসেবে আহসান হাবিব কামাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ফুল বাগানের মালি। নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্যান্য কয়েদীদের সঙ্গে রাখা হয়নি সাবেক মেয়র কামালকে। জেলের মধ্যের একটি সেলে তাকে রাখা হয়েছে।

গত ৯ নভেম্বর থেকে একটি দুর্নীতি মামলায় ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল। পরদিন ১০ নভেম্বর থেকে তাকে ফুলবাগান রক্ষনাবেক্ষনের কাজে নিযুক্ত করে কারা কর্তৃপক্ষ।

৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের একটি দুর্নীতি মামলায় গত ৯ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি কেন্দ্রিয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামাল, সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলামসহ ৫ জনকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেয় বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত। একই সঙ্গে আদালত সাবেক মেয়র কামাল এবং মো. জাকির হোসেন নামে এক কথিত ঠিকাদারকে ১ কোটি টাকা করে জরিমান করে। ওই দিনই আসামীদের বিশেষ ব্যবস্থায় কারাগারে নেওয়া হয়। 

আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপম জানান, সাবেক মেয়র হিসেবে তার বাবাকে কারাগারে ডিভিশন (মর্যদা) দেয়া হয়নি। তাকে সাধারণ কয়েদীদের মতো রাখা হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ২ মাসেও কারাগারে তার বাবার সঙ্গে পরিবারের কোন স্বজনকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তবে তার বাবা কারাগারে শতভাগ সুস্থ আছেন। তিনি কারাগারে প্রতিদিন দুই বেলা ১ ঘন্টা করে হাঁটছেন। 

রূপম জানান, তারা বিশেষ জজ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল করেছেন। গত ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শুনানী শেষে তার বাবার বিরুদ্ধে করা ১ কোটি টাকার জরিমানা স্থগিত করেছেন। এখন জমিনের জন্য শুনানী অপেক্ষমান রয়েছে।

বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, সশ্রম কারাদন্ডের অর্থ হলো কারাভ্যন্তরে কর্তৃপক্ষ বন্দীদের দিয়ে কারাগার ব্যবস্থাপনার কাজ করাবেন। কাজের বিনিময়ে সাজা রেয়াত পাওয়া যায়। দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল (৬৫) শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার হার্টে রিং-পড়ানো। তার হার্টে সমস্যা আছে। এছাড়া তিনি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনী এবং পায়ে সমস্যায় ভুগছেন। শারীরিক সক্ষমতাসহ নানা দিক বিবেচনায় তাকে গত ১০ নভেম্বর থেকে কারাগারের ফুলবাগান রক্ষাণাবেক্ষণ কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। ফুল বাগানে কাজ করে তিনি মনেও প্রশান্তি পাচ্ছেন। 

কারাগারের জেলার মো. শাহে আলম জানান, সাধারণত ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ও দুর্ধর্ষ আসামীদের সেলে রাখা হয়। আহসান হাবিব কামাল একজন সাবেক মেয়র এবং বিরোধী দল বিএনপি’র নেতা। অন্যান্য আসামীদের সঙ্গে রাখলে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যহত হতে পারে। এছাড়া গণটয়লেট ব্যবহারেও তার সমস্যা হতে পারে। এসব দিক বিবেচনায় সাবেক মেয়র কামালকে পৃথক একটি সেলে রাখা হয়েছে। 

এদিকে একই মামলায় ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিসিসির বরখাস্তকৃত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খান মো. নুরুল ইসলামকে কারা হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের রাইটার (দেখভালকারী) হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম।