নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির বক্তব্য কূটকৌশলের অংশ

নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির বক্তব্য কূটকৌশলের অংশ

নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য কূটকৌশলের অংশ ও তাদের কুৎসিত অপরাজনীতি দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, তাদের (বিএনপি) লক্ষ্য দেশে অসুস্থ রাজিনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা।

শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে পদ্মা লাইফ টাওয়ারে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ আইপি টিভির কার্যালয়ে একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিবার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসির লেখা ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশে প্রবন্ধ পঞ্চাশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সার্চ কমিটি গঠনকে মির্জা ফখরুল বলেছেন তামাশা। অথচ বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার সময়ে কারও সাথে আলাপ না করে ইসি গঠন করেছে। বর্তমানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সবচেয়ে উত্তম পন্থা অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে। বিএনপি লক্ষ্য ছিল না দেশে ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন হোক। তারা চেয়েছিল আজিজ মার্কা কমিশন হোক। তাদের লক্ষ্য ছিল ইসি গঠন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যেসব কর্মকাণ্ড হচ্ছে এর দায়ভার কি বিএনপি এড়াতে পারে?

তিনি বলেন, তাদের দাবির মুখে আমাদের সরকার আইন করেছে। আইনমন্ত্রী খসড়া বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করলেন। সেখানে বিএনপির সংসদ সদস্যরাও ছিলেন। বিএনপি-জাতীয় পার্টির ২২টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে। সংসদের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। আইন যখন পাস হলো তখন তারা বলে সরকার তড়িঘড়ি করে আইন করেছে। রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করলেন। বিএনপির সমমনা অনুসারী, তারা নাম দিয়েছে। বিএনপি সার্চ কমিটিতে নাম প্রস্তাব না করলেও তাদের অনুসারীদের মাধ্যমে নাম দিয়েছে। সার্চ কমিটির কাছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে নাম দিয়েছেন সেটাই বিএনপির দেয়া নাম। উনি নাম দেয়া মানেই বিএনপির নাম দেয়া।

হানিফ বলেন, পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দেশে দুঃশাসন চেপে বসেছিল। স্বাধীনতার পক্ষে কথার লোক ছিল না, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল, ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল, বঙ্গবন্ধুর নাম নিষিদ্ধ ছিল, ৩২ নম্বরের দুয়ারে তালা দেয়া ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে এসে ভেতরে যেতে পারেননি। আওয়ামী লীগকে খণ্ড-বিখণ্ড করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। জেলখানায় ৪ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল। সেই সময়ে দেশে আলো নিয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

দেশের যতকিছু অর্জন সব আওয়ামী লীগের হাত ধরে হয়েছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে আর দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শত প্রতিকূলতা মাড়িয়ে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সন্তান যেমন মায়ের কাছে নিরাপদ ঠিক তেমনি শেখ হাসিনার কাছে নিরাপদ বাংলাদেশ। দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার ধারেকাছেও কেউ নেই।

তিনি বলেন, বাণী ইয়াসমিন হাসি সাংবাদিক এবং লেখক। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে সে কোনো কম্প্রোমাইজ করে না। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা আমাদের অহংকার, সেই জায়গায় হাসির মতো ডেটিকেটেড মানুষ প্রয়োজন। সরকারের ভুল ত্রুটি তুলে ধরতেও সে পিছপা হয় না। ভবিষ্যতেও প্রতিবাদী লেখা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জাগরণ আইপিটিভির প্রধান সম্পাদক ও গৌরব ৭১’এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, কিশোরগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জেড. এম. পারভেজ সাজ্জাদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ।