আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলার দক্ষিণ বাগধা গ্রামে এক গৃহবধূকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ সময় গৃহবধূর প্রায় বিবস্ত্র ছবি মুঠোফোনে ধারণ করে তারা। নির্যাতনের পর গৃহবধূকে হাসপাতালে নিতে বাঁধা দেয় তারা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় গত সোমবার বিকেলে ওই গৃহবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই নারীকে দেখতে গিয়েছিলো থানা পুলিশ। তবে এ ঘটনায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর ভগ্নিপতি ইমদাদুল হক বাহাদুর জানান, স্বরূপকাঠীর কাটাখালী থেকে গত রোববার বিকেলে তার (বাহাদুর) বাড়িতে বেড়াতে আসেন ওই গৃহবধূসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রতিপক্ষ কাশেম খানের বাড়ির পাশ দিয়ে তার বাড়িতে প্রবেশের সময়ে কাশেমের ছেলে ইলিয়াস খান ও তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম তাদের পথরোধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পারভীনকে মারধর করে। এ সময় ইলিয়াসের পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূকে শিকল দিয়ে বাড়ির সামনে একটি আমড়া গাছের সঙ্গে তালা দিয়ে আটকে রাখে। মারধরের সময় গৃহবধূর শরীরে পরিধেয় বস্ত্র ছিড়ে গেলে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় মুঠোফোনে ছবি তোলে ইলিয়াসের ছেলে আহাদ। মারধরের হাত থেকে পারভীনকে উদ্ধার করতে যাওয়ায় গৃহবধূর বোন সুমি ও ভাই শাহজালালকেও মারধর করে তারা।
শিকলে বাঁধা অবস্থায় গৃহবধূর ডাক চিৎকারে গ্রাম পুলিশ সদস্য পরেশ দাস, স্থানীয় আবুল কালাম সরদার ও আব্দুল হক ঢালী এগিয়ে গেলে তাদের প্রতিবাদের মুখে শিকলে বাঁধা গৃহবধূকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ইলিয়াস। আহত পারভীনকে তাৎক্ষনিক হাসপাতালে নিতেও বাঁধা দেয় তারা। পরদিন সোমবার তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বজনরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমীন হোসাইন জানান, আহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাগধা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি শিকলে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা জানান নির্যাতিত গৃহবধূর ভগ্নিপতি ও স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ইমদাদুল হক বাহাদুর।
এদিকে গৃহবধূকে নির্যাতনের খবর পেয়ে থানা পুলিশ গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে অবগত হন।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, শিকলে বেঁধে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।