আড়াই মাস পর ভারত থেকে এলো অক্সিজেন

ভারত থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দীর্ঘ আড়াই মাস পর আবার শুরু হয়েছে অক্সিজেন আমদানি।
ভারতে করোনা চিকিৎসা খাতে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দেয়ায় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সেদেশের সরকার বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এরপর মে মাসের শেষ দিক থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। এখন বেশ সঙ্কট রয়েছে করোনা রোগীদের অতিপ্রয়োজনীয় এই অক্সিজেনের।
সোমবার বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত দুইদিনে ভারত থেকে ১৯০ মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়েছে। আমদানিকারক ‘লিন্ডা বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অক্সিজেন ছাড় করাতে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘সারথি এন্টারপ্রাইজ’।
লিন্ডা বাংলাদেশ ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান বলেন, ২১ এপ্রিলের পরে তাদের কোম্পানির কোনো অক্সিজেন দেশে প্রবেশ করেনি। ভারতে অক্সিজেন সঙ্কট থাকার কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অক্সিজেন দেয়া বন্ধ রাখে। এখন সেখানে চাহিদা কমে যাওয়ায় আবার ভারতীয় সরকার অক্সিজেন রপ্তানিতে সম্মতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত দুইদিনে কোম্পানির ১৯০ মেট্রিক টন অক্সিজেন বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এখন থেকে প্রতিদিনই ভারত থেকে এ কোম্পানির অক্সিজেন বাংলাদেশে আসবে।
অক্সিজেন চালান কাস্টমস ছাড়করণের দায়িত্বে থাকা বেনাপোলের সারথি এন্টারপ্রাইজের মালিক মতিয়ার রহমান বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ভারতে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। এমনকি ভারতে অক্সিজেনের চরম সঙ্কট তৈরি হয়। যে কারণে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখে। ভারতে করোনা পরিস্থিতি একটু উন্নতি হওয়ায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি আবারও বাংলাদেশ অক্সিজেন দেয়া শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশেও করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এর ফলে বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েই চলেছে। যে কারণে জরুরি পণ্য সরবরাহের তালিকায় থাকায় দ্রুত কাস্টমসের কার্যাবলী সম্পাদন করে অক্সিজেনের চালানটি দ্রুত খালাস করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছানো হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে, দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন অক্সিজেনের চাহিদা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ থেকে ৫০০ টন। ভারত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করলেও দেশে উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছিল।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে এতদিন ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি বন্ধ ছিল। করোনাকালীন এ সময়ে চিকিৎসা খাতে ব্যবহৃত জরুরি অক্সিজেন যাতে ব্যবসায়ীরা দ্রুত খালাস করতে পারেন, সেই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।