জনগনের বাজেট জনসম্মুখে

জনগনের  বাজেট জনসম্মুখে
বরিশাল সিটি করপোরেশনর ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেনমেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। নতুন কোন কর আরোপ না করে ৫৪৮ কোটি ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৪৩৭ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে ওই বাজেট ঘোষণা করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় নগর ভবনের সামনে উন্মুক্তভাবে ওই বাজেট ঘোষণা করা করেন মেয়র। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট ছিলো ৪৪৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৫৫ টাকার। সংশোধিত হয়ে যা দাড়িয়েছে ১২৫ কোটি ৩৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬৪৫ টাকা। আর সবশেষে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ৫৪৮ কোটি ১০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪৩৭ টাকা ঘোণষণা করা হয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের বাজেট অনুষ্ঠানে মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমি নগরবাসীর সাথেই আছি, আগামীতেও যে কোন পরিস্থিতিতে এই নগরবাসীর সাথেই থাকবো। বর্তমান পরিষদ একটি পরিবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। সাংবাদিকরা আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন, কোথায় বিচ্যুতি হলে ধরিয়ে দিবেন। এতে আমরা আরো ভালোভাবে কাজ করার প্রেরণা লাভ করবো। নগরের সমস্যা অনেক কিন্তু চাহিদা ব্যাপক। করপোরেশনের আয় দিয়ে ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও সুন্দর এবং উন্নত নগরী গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মেয়র বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের শ্রমিকরা কোন দুর্নীতি করে না। আমদের স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচরীরা নগর ভবনের সিস্টেম গড়ে এবং ভাঙে। মেয়র আসে আর মেয়র যায় এরা তাদের কর্মকা- বন্ধ করে না। কর্মকর্তাদের কারণে সিটি করপোরেশন দুরাবস্থায় পড়ে। এই দুরাবস্থা দূর করতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সতর্কও করেন মেয়র। বাজেটের বড় একটা অংশ ধরা হয়েছে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে পাওয়া অর্থের ওপর ভিত্তি করে। উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারী এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার সম্ভাব্য অনুদান ধরা হয়েছে ৪১৬ কোটি ২২ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৪ টাকা। রাজস্ব থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৩০ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ২৯৩ টাকা। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বর্তমান বাজেটে স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তাবায়নযোগ্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ৪৩টি খাল পুনখনন, খালের ওপর আধুনিক সেতু নির্মাণ, নগরের চারদিকে রিং রোড, অ্যাপ্রোচ সড়ক, বর্ধিত এলাকায় পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন, বধ্যভূমি আধুনিকায়ন, নতুন নগর ভবন, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল, বহুতল আধুনিক সুপার মার্কেট নির্মাণসহ নতুন বেশ কিছু প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৯টি মধ্য মেয়াদী এবং ১০টি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের সীমান বৃদ্ধি, জলাশয় ভরাট বন্ধ করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাসহ বেশকিছু উন্নয়নমূলক কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বাজেট অনুষ্ঠানে মেয়র নগরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের উত্তর দেন। একই সঙ্গে তিনি নগরবাসীকে নগর উন্নয়নের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানান। বাজেট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মেয়র পত্নী লিপি আব্দুল্লাহ, প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু, রফিকুল ইসলাম খোকন, বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, কাউন্সিলরবৃন্দসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং নগরের কয়েক হাজার বাসিন্দা।