দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে ৫২ দেশ

দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে ৫২ দেশ

ঋণ পরিশোধ নিয়ে সমস্যার মধ্যে থাকা এবং দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ৫২টি দেশকে সহায়তায় জরুরি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে সতর্কবার্তা জানিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা আখিম স্টাইনার।

ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) প্রধান স্টাইনার আরও বলেন, ৫২টির মধ্যে ২৫টি দেশ সরকারি আয়ের এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি খরচ করছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে।

কাতারের দোহায় শনিবার এলডিসি সম্মেলনের বাইরে এক সাক্ষাৎকারে স্টাইনার বলেন, রাষ্ট্রীয় ঋণ প্রশ্নে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিস্থিতি এ মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুতর। ইউএনডিপির অনুমান, ২৫টি দেশ হয় ঋণে পর্যুদস্ত, আর না হয় পর্যুদস্ত ও দেউলিয়া হওয়া থেকে এক কদম দূরে।

তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি। স্টাইনার নিজেও সুনির্দিষ্টভাবে কোনো নাম উল্লেখ করেননি। গত সপ্তাহে ইউএনডিপির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ২০২১ সালেন মূল্যমানে ৫২টি দেশের ঋণের ৩০ শতাংশ মওকুফের আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ৫২ দেশের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, লেবানন, ইউক্রেনসহ আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের ২৩টি দেশ। এ ছাড়াও লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ১০ দেশ এবং পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আটটি দেশ এ তালিকায় রয়েছে।

স্টাইনার বলেন, অর্থবাজার এদিকে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছে না। ওই ৫২টি দেশে বৈশ্বিক বৈদেশিক ঋণের মাত্র তিন শতাংশ। কিন্তু বৈশ্বিক জনগোষ্ঠীর ছয় ভাগের এক ভাগ রয়েছে ওই দেশগুলোতেই। ঋণ পরিশোধে ২৫টি দেশ সরকারি আয়ের এক-পঞ্চমাংশ যেভাবে খরচ করছে, তা টেকসই কোনো সমাধান নয়।

স্টাইনার আরও জানান, নাইজেরিয়া, মালি এবং বুরকিনা ফাসোর মতো আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেগুলোর সরকার সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। এসব কারণে দেশগুলোর উন্নয়ন কম করে হলেও ২০ বছর পিছিয়ে গেছে।

ইউএনডিপি প্রধান বলেন, এখন আপনার ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে, বৈশ্বিক খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যে প্রভাব পড়েছে এবং বিশেষ করে সুদের হারের দিকে তাকালে দেখার যাবে মূল্যস্ফীতিতে তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসও ধনী রাষ্ট্রগুলোকে এক হাত নিয়েছেন। ধনী রাষ্ট্রগুলো স্বল্প উন্নত দেশগুলোর প্রতি ‘লুণ্ঠনমূলক’ সুদের হার আরোপ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।