পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেনি: আলমগীর ইকবাল

পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেনি: আলমগীর ইকবাল

চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল। পরীমণিকে ক্লাবের সম্মানিত অতিথি বলেও সম্বোধন করেছেন তিনি।

পরীমণিকে উত্তরার বোট ক্লাবে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ গ্রেপ্তার হওয়ার দুদিন পর বুধবার অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, গত ৭ জুন মধ্যরাতে পরীমণি ও তার সঙ্গীরা গুলশানে তার ক্লাবে গিয়ে ‘হাঙ্গামা’ বাঁধিয়েছিলেন।

এরপর বনানীতে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সামনে এসে পরীমণি দাবি করেন, মূল ঘটনা থেকে নজর সরাতে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে দেশ রূপান্তর যোগাযোগ করে অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবালের সঙ্গে।

গতকাল বৃহস্পতিবার কে এম আলমগীর বলেন, “আমাদের ক্লাবের একজন সদস্যের সঙ্গে পরীমণি ৭ জুন ক্লাবে এসেছিলেন। আমাদের ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী, সদস্যদের সঙ্গে অতিথি আসতে পারেন। কিন্তু সেই অতিথি যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন, তার জন্য আমরা ক্লাবের সদস্যকে জবাব দিতে বলতে পারি। অতিথিকে কিছু বলার অধিকার আমাদের নেই। আমরা পরীমণির বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি।”

বিষয়টি থানায় গিয়েছে কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেদিন একটা সামান্য ঘটনার প্রেক্ষাপটে পরীমণি ৯৯৯ নম্বরে কল করে ক্লাবে পুলিশ এনেছিলেন। পুলিশ এসে তেমন কিছু পায়নি, কিন্তু পুলিশ কোথাও গেলে তো সেগুলো লিখিত লিপিবদ্ধ করে রাখেন। পুলিশের যে কর্মকর্তা এসেছিলেন, তিনি ওয়াকিটকিতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পর এখানকার কিছু বিষয়ের নোট লিখে নিয়ে চলে যান। আমরা ক্লাব থেকে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করিনি।”

সেদিনের ঘটনার জন্য ক্লাবের সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে কে এম আলমগীর বলেন, “পরীমণি ক্লাবের যে সদস্যের সঙ্গে এসেছিলেন, আমরা তাকে নোটিশ দিয়েছি। তিনি আমাদেরকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ২/৩টা প্লেট, গ্লাস ভাঙা হয়েছে, সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে জানিয়েছেন। এখন আগামী গতকাল বৃহস্পতিবার ক্লাবের পরিচালনা কমিটির মিটিং আছে, সেখানে ওই সদস্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”

পরীমণির বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়ার মতো কোনো ঘটনা সেদিন ঘটেনি বলেও জানান ক্লাবটির সভাপতি। তিনি বলেন, “খুবই সামান্য ঘটনা ছিল সেদিন। পরীমণিই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ডেকেছিলেন। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলতেও রাজি না। মিস পরীমণির বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।”

পরীমণিকে বোট ক্লাবে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নাসির উদ্দিন মাহমুদ গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবের সদস্য কিনা জানতে চাইলে কে এম আলমগীর বলেন, “নাসির উদ্দিন মাহমুদ উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমাদের ক্লাবেরও উনি সদস্য, কিন্তু উনি কখনো আসেন না। এখনো সদস্যপদে আছেন।”

এদিকে গত ৭ জুন মধ্যরাতে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে যাওয়ার কথা পরীমণি স্বীকার করেছেন। সিসি টিভির ফুটেজে পরীমণির সঙ্গে তার সাবেক বাগ্দত্তা তামিম হাসান ও কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ করিম জিমি ও আরেক নারীকে সে রাতে ক্লাবে ঢুকতে দেখা যায়।

তবে হাঙ্গামার অভিযোগ অস্বীকার করে পরীমণি সাংবাদিকদের সামনে প্রশ্ন রেখেছেন- সেদিন ক্লাবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে তা আট দিন পর কেন প্রকাশ করা হলো?
এ বিষয়ে আলমগীর বলেন, “আমরা তো কোনো ভিডিও করিনি। কিছুই করিনি। পরীমণি ট্রিপল নাইনে কল করে পুলিশ এনেছিলেন, পুলিশ সম্ভবত অনর্থক আনার জন্য নিজেরাই জিডি করেছে। বিষয়টি আমরা জানিই না। কালকেও সাংবাদিকরা এসেছিলেন, আমরা তো এটাও করিনি। সাংবাদিকরা জানতে চাইছে বলে জানিয়ে দিলাম।”

অল কমিউনিটি ক্লাবে পরীমণি যাওয়ার পরের রাতেই উত্তরার পাশে বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবের সেই ঘটনা ঘটে। তার চার দিন পর তিনি প্রথমে ফেইসবুকে অভিযোগ করেন, ওই ক্লাবে তিনি ‘ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার’ শিকার হয়েছিলেন। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলন করলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে তিনি মামলা করলে ব্যবসায়ী নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তুহিন সিদ্দিকী অমিকে, যিনি তাকে ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন।