পর্যটক বরণের অপেক্ষায় সাগরকন্যা কুয়াকাটা

পর্যটক বরণের অপেক্ষায় সাগরকন্যা কুয়াকাটা। পাখির কলতানে মুখরিত সবুজ প্রকৃতি, বালিয়াড়িতে লাল কাকড়ার অবাধ বিচরণে ফুটে ওঠা প্রকৃতির আল্পনা। সৈকতের গুল্ম আর লতায় নতুন রূপে সেজেছে কুয়াকাটা। নীল জলরাশি আর ঢেউয়ের গর্জন ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের যাতায়াত হয়েছে আরও সহজ। তাই এবারের ঈদুল আযহার ছুটিতে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা আরও বাড়বে বলেই প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। এ লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরাও তাদের হোটেল-মোটেলগুলো সাজিয়ে রেখেছেন, পর্যটক বরণে তারা তৈরি। দোকানীরাও একটু বেশি বেচাকেনার আশায় সাজিয়েছেন পসরা। পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে সতর্ক অবস্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর হোটেলগুলোর ৭০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। তবে বাড়তি চাপ সামলাতে রয়েছে ইকো ট্যুরিজম ব্যবস্থা এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে পাওয়ায় ভ্রমন পিপাসুদের কাছে কুয়াকাটা অন্যতম পছন্দের জায়গা। এছাড়াও আছে, চর বিজয়, কুয়াকাটার কুয়া, সৈকতের লেম্বুরবন, গঙ্গামতির লেক, লাল কাঁকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট।
কুয়াকাটায় পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য ১৬০ টির অধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। যার ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজারের মত।
সৈকত লাগোয়া আচার ও ঝিনুক ব্যবসায়ী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসতে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা। তাই কোরবানির ঈদের দিন অনেক পর্যটকদের আগমন ঘটবে। এজন্য ক্রেতাদের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে মালামাল ক্রয় করে দোকান সাজিয়ে রেখেছি।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম বাচ্চু জানান, পর্যটকদের আগাম সম্ভাবনাকে ঘিরে আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি।
হোটেল সমুদ্র বাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, ‘আগামী ১২-১৩ তারিখে পুরো রিসোর্ট অগ্রীম বুকিং পেয়েছি। আবার ১৪-১৫ তারিখেরও ৭০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।’ হোটেল রেইন ড্রপসের পরিচালক দীপংকর চন্দ্র সিকদার জানান, ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে অগ্রীম ৫০-৬০ শতাংশ রুম বুকিং পেয়েছি। আশাকরছি বাকিগুলোও বুকিং হয়ে যাবে।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা টোয়াক’র সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, ইত্যেমধ্যে কুয়াকাটার হোটেল মোটেল’র ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.মোতালেব শরীফ বলেন, পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকলে ইকো ট্যুরিজমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মহিপুর থানা ওসি খোন্দকার মো. আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। এছাড়া ঈদকে ঘিরে পর্যটকরা যাতে নিরাপদ ভ্রমন করতে পারে এর জন্য বাড়তি নজরদারি থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আবদুল খালেক জানান, পর্যকদের নিরাপদ ভ্রমনের জন্য গোয়েন্দাদের নজরদারিসহ সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।