বরগুনায় ঘর পেল ৪১১ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার

বরগুনায় ঘর পেল ৪১১ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দেশের কোনো মানুষ আশ্রয়হীন থাকবে না। পিতার সেই স্বপ্ন পূরণে মুজিববর্ষে ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় বরগুনায়ও গৃহহীন-ভূমিহীনদের গৃহ ও জমি উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরগুনায় তৃতীয় পর্যায়ে ৪১১ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ঈদ উপহার।

মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় গণভবন থেকে প্রধান মন্ত্রী ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে সারাদেশে একযোগে ৩৪ হাজার ৯শত ৪জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমির দলিল, জমির খতিয়ান, গৃহ প্রদানের সনদসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরগুনা সদরের খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম পর্যায়ে ২৩২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭৯৩টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৭২৫টি ঘরের মধ্যে ৪১১টি ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সদর উপজেলার খাজুরতলায় ৫০টি জমিসহ ঘর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

জানা যায় বরগুনা সদর উপজেলাধীন খাজুরতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে মোট জমি রয়েছে ১১.৪৫ একর। সেখানে ইতোমধ্যেই নির্মিত হচ্ছে ৩২৯ টি ঘর। আরও ১৫০টি ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এটি হবে বরগুনায় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ কেন্দ্র। উপকারভোগী হিসেবে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের ২২ জন, ভিক্ষুক ১০ জন, শারীরিক ভাবে অক্ষম ২০ জন, স্বামী পরিত্যাক্তা ২৮ জন,হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্য ৪১ জন। তারা ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একত্রে বসবাস করে এক অসাধারণ নজির স্থাপন করেছেন।

উপকারভোগীরা দুই শতাংশ করে জমি পেয়েছেন একটি অর্ধপাকা দুই কক্ষের ঘরে পাচ্ছেন বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং এতে রয়েছে গোসলখানা, টয়লেট ও রান্না ঘর। স্বামী-স্ত্রীর  উভয়ের নামে যৌথভাবে দলিল করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রকল্প এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো হবে। সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ফলে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন সুবিধাভোগীরা। এছাড়া একটি পুকুরও রয়েছে এ আশ্রয়ন প্রকল্পে। শিশু-কিশোরদের শরীর গঠন ও বিনোদনের জন্য প্রকল্প এলাকায় থাকবে খেলার মাঠ। একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক গ্রামের সব নাগরিক সুবিধাই থাকছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে।

বিশেষ করে সদরের খাজুরতলা আশ্রয়ন প্রকল্পে ২২ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ফলে সমাজের মূলধারায় অঙ্গীভূত হওয়ার সুযোগ পাবে তৃতীয় লিশের সদস্যরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভুসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা।