বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সর্বোচ্চ শনাক্ত, মৃত্যু ১২

বরিশাল বিভাগে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় এক দিনে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
আর এই সময়ে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে নতুন করে ২৮৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০৮। আর সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭ হাজার ৮৮৬ জন।
এছাড়া একই সময়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের এবং বরিশাল জেলায় একজন, পটুয়াখালীত জেলায় একজন ও পিরোজপুর জেলায় চারজনসহ বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩১১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, মোট আক্রান্ত ১৭ হাজার ৮৮৬ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৫৫ জন।
আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন শনাক্ত ৮৫ জন নিয়ে মোট ৭ হাজার ৮৭৮ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ২০ জন নিয়ে মোট ২৪৮৫ জন, ভোলা জেলায় নতুন আটজন সহ মোট ২০৬০ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৮০ জন নিয়ে মোট ২২৭৫ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ২৯ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ১৪৪২ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ৬৪ জন শনাক্ত নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৪৬ জন।
এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ছয়জনের এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০৭ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৫৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৫৩৩ জনের মধ্যে ৩৭ জনের কোভিড টেস্টের রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিচালকের তথ্য সংরক্ষক জাকারিয়া খান স্বপন জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার) সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩৭ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ৫ জন ভর্তি হয়েছেন। উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি ছয়জন মৃত্যুবরণ করেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ১৪৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন। যাদের মধ্যে ২৪ জনের করোনা পজেটিভ এবং ১২৪ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৯ জন করোনা পরীক্ষা করান। যারমধ্যে ৪১.৭৯ শতাংশ পজেটিভ শনাক্তের হার।
গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ অনেকটা স্থিতিশীল থাকলেও ১৬ জুনের পর তা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে বরিশাল, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি এই তিন জেলায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। তবে শনাক্ত ও মৃত্যুর হারে বর্তমানে সবার শীর্ষে রয়েছে বরিশাল জেলা।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, এ বিভাগে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতি হচ্ছে। পিরোজপুরে ডেলটা ধরণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে বিভাগে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখন লক্ষণ দেখা দিলেই নমুনা পরীক্ষা করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই সংক্রমণ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।