ভোরের আলোর সাংবাদিকতা কর্মশালা, সাংবাদিকতায় তরুণরা নতুন সম্ভাবনার পথ দেখাবে

ভোরের আলোর সাংবাদিকতা কর্মশালা, সাংবাদিকতায় তরুণরা নতুন সম্ভাবনার পথ দেখাবে
সাংবাদিকতায় তরুণ ও মেধাবীরা নতুন সম্ভভাবনার পথ দেখাবে। এই তরুনরাই আগামীর বাংলাদেশের কা-ারী হবে। বরিশালে ভোরের আলোর এটা একটা ব্যতিক্রমী আয়োজন। গতকাল বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় নগরের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত বরিশাল প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুইদিনের কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা। কর্মশালায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, দুইটা ‘পি’ একটি প্রেস এবং অন্যটি পুলিশ যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে সমাজের অনেক অসঙ্গতি দূর করা সম্ভব। সাংবাদিক এবং পুলিশ একজন অন্যজনের পরিপূরক। সংবাদকর্মীরা পুলিশের কাজে সবচেয়ে বেশি সহযোগী হয়। তাই তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করা দরকার। ভালো সাংবাদিকের সঙ্গে ভালো পুলিশের সম্পর্ক কখনো খারাপ হয় না। পুলিশ সদস্যরা নেতিবাচক কাজ করলে তখনই সাংবাদিক পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এটা সাংবাদিকদের বেলায়ও কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। আমরা এই দ্বন্দ্ব ঘোচাতে চাই। আজকের দৈনিক ভোরের আলো তরুণ শিক্ষিত ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ দিয়ে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমরা অপরাধের বেশি তথ্য পাই গণমাধ্যম থেকে। আগামীতে এই প্রশিক্ষণ নেওয়া সাংবাদিকরা আমাদের সেই তথ্য পেতে আরো সহযোগী হয়ে কাজ করবে। এরাই সমাজ থেকে হলুদ সাংবাদিকতা দূরে ঠেলে দেবে। সমাজ ইতিবাচক দিকে এগিয়ে যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাট্যজন সৈয়দ দুলাল বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের আয়না। সেই আয়নায় অনেক সময় মরিচা পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। দৈনিক ভোরের আলোর এই নতুন উদ্যোগ সেই মরিচা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা নেবে। এক ঝাঁক তরুণ ও শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে যদি সাংবাদিকতা পেশায় থাকে তাহলে এই পেশার মান উন্নয়ন হবেই। আর সেই সুবিধা পাবে সমাজ ও রাস্ট্র। বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ বলেন, কোন আঞ্চলিক দৈনিকের উদ্যোগে প্রায় ৫০জন তরুণকে নিয় কর্মশালার আয়োজন আমার জানা মতে এটাই প্রথম। ভোরের আলোর এই উদ্যোগ সফল হবেই। নানা কারণে আঞ্চলিক দৈনিক থেকে পাঠকরা বিমুখ হচ্ছে। কিন্তু ভোরের আলোর এই উদ্যোগ চলমান থাকলে জাতীয় দৈনিকের মতো আঞ্চলিক দৈনিকও উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারবে। বরিশাল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন বলেন, ভোরের আলো ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। বরিশালে অনেক সাংবাদিক প্রেস লিখে ঘুরে বেড়ায়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত নয়। এসব কারণে সাধারণ পাঠকের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। যদিও বেশিরভাগ সাংবাদিক যারা সংবাদপত্রকে লালন করেন, তারা এই ধারার বাইরে। তারা প্রেস তো লেখেন-ই না বরং কোন কোন সময় সাংবাদিক পরিচয়ও দিতে চান না। ভোরের আলোর নতুন উদ্যোগ তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সাংবাদিকতার দিকে নিয়ে আসা। এই ধারা অব্যহত থাকলে অপসাংবাদিকতা দূর হবে। বরিশাল হয়ে উঠবে সাংবাদিকতার চারণক্ষেত্র। ভোরের আলোর উপদেষ্টা সম্পাদক এবং ডিজেবল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (ডিডাব্লিউএফ)-এর চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছি। তাই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর দেওয়া স্বাস্থ্যসেবাকের এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছি। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর এই ভিশন বাস্তাবায়ন করতে হলে স্বস্থ্য সেবাসহ সরকারের সকল বিষয়ের তথ্য প্রচার করা দরকার। এই কাজে খবরের কাগজ, বেতার এবং টেলিভিশ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সেজন্যই পত্রিকায় সামান্য পৃষ্ঠপোষকতার চেষ্টা করছি। এই উদ্যোগে তরুণরা এগিয়ে আসলে আমাদের সেই কাজ আরো সহজ হবে। তরুণ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে গণমাধ্যমে কাজ করলে তথ্য সমৃদ্ধ গণমাধ্যম পাওয়া সম্ভব হবে। দুইদিনের কর্মশালার প্রথম দিনে সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ ও হাতেখড়ি বিষয়ে কথা বলেন, ভোরের আলোর সম্পাদক, মোবাইল জার্নালিজম (মোজো) এর ওপর প্রশিক্ষণ দেন ভোরের আলোর বার্তা সম্পাদক তন্ময় কুমার নাথ, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে সংবাদের বিষয়, হলুদ সাংবাদিকতা এড়িয়ে চলা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন নিউজ ২৪ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান রাহাত খান, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকতা ও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা নিয়ে তরুণ প্রশিক্ষণার্থীদের উজ্জীবীত করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, সংবাদের উৎস ও টেলিভিশন সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট নিউজের ব্যুরো প্রধান মুরাদ আহম্মেদ, সংবাদে রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রতিবেদন তৈরিতে করণীয় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক দীপু হাফিজুর রহমান। কর্মশালায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রজমোহন কলেজ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, সরকারি বরিশাল কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়সহ বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪০জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। কর্মশালায় সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, ভোরের আলোর এডমিন সুকান্ত অপি, ইভেন্ট মেনেজমেন্ট রিয়াদ মাহমুদ, কার্যসহকারী অভিজিৎ।