শিশুর জ্বরে প্রাথমিকভাবে যা করবেন

শিশুর জ্বরে প্রাথমিকভাবে যা করবেন

প্রায়ই বাচ্চাদের জ্বর হয় কিন্তু জ্বরের তাপমাত্রা যখন অনেক বেড়ে যায়, তখন কী করবেন অনেকে বুঝতে পারেন না এবং ঘাবড়ে যান। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ তো নিতেই হবে এবং তৎক্ষণাৎ জ্বরের তাপমাত্রা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

যা করবেন

*থার্মোমিটার হাতের কাছে রাখতে হবে।
*নিয়ম করে জ্বর মাপতে হবে প্রতি আধা থেকে এক ঘণ্টা পরপর।
*ঘুমের মধ্যেও জ্বর মাপতে হবে, কারণ অনেক সময় বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকার মধ্যেও জ্বর বেড়ে যেতে পারে।
*জ্বর ১০০ উঠে গেলে প্যারাসিটামল-জাতীয় সিরাপ খাইয়ে দিতে হবে এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে পাতলা কাপড় (সুতি) ভিজিয়ে কপাল ও মাথায় পট্টি দিতে হবে।
* জ্বর ১০২ এবং তার বেশি হলে মাথায় পানি ঢালতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ দিতে হবে।
*বগলতলা ও ঊরুর কুঁচকি বারবার মুছে দিতে হবে।
*যতক্ষণ তাপমাত্রা ১০৪ থেকে ১০৩ থেকে ১০০ থেকে ১০১-এ না নামবে, ততক্ষণ পানি ঢালতে হবে।
* জ্বর বেড়ে গেলেই খিঁচুনির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ জন্য চেষ্টা করতে হবে যেন তাপমাত্রা কমিয়ে আনা যায়। তাই মাথায় ও ঘাড়ের পেছনে যতক্ষণ জ্বর থাকবে ততক্ষণ পানির পট্টি দিতে হবে।
*তাপমাত্রা কমে এলে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে হবে। আর আগে চিকিৎসক দেখে থাকলে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করাতে হবে।
*বারবার খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
*এ সময় খাওয়ার রুচি থাকে না, তাই অল্প খাবারে বেশি শক্তি পাবে, এমন খাবার দিতে হবে। শরবত, ডাবের পানি, সুপ (কর্ণ সুপ), ফলের রস, দুধÑ যা খেতেও সহজ।

লক্ষ রাখতে হবে
মুখের ভেতর, জিহ্বায়, মাড়িতে ঘা দেখা যায় কি না।
জ্বরের সঙ্গে নতুন কোনো লক্ষণ দেখা যায় কি না, যেমন- 
* গায়ে হাম বা লুতি, 
* পাতলা পায়খানা, 
* চোখ হলুদ, 
* প্রস্রাবে জ্বালা-পোড়া বা ব্যথা বা তলপেটে ব্যথা, 
* গলাব্যথা, 
* খুব কাশি, 
* শ্বাসকষ্ট, 
* কাঁপুনি নিয়ে জ্বর আসা, 
* ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া ইত্যাদি।

কখন শিশুকে ডাক্তার দেখাবেন

তিন মাসের কম বয়সী শিশুর জ্বরের সঙ্গে যদি খিঁচুনি হয়, ঘাড় শক্ত থাকে বা তীব্র মাথাব্যথা হয়, ঘুমঘুম ভাব, সারাক্ষণ কান্না করতে থাকে, ঘ্যানঘ্যান বা বিরক্ত করতে থাকে, ঘুরে থাকে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে শিশুর মাথার তালু খুব ফুলে গেলে। খুব বেশি অসুস্থ মনে হলে। বিশেষ করে জ্বর কমার পর।
শিশুর প্রস্রাবে কোনো জ্বালা-পোড়া থাকলে।

প্রস্রাব করতে কষ্ট হলে বা পেটে ব্যথা থাকলে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে যদি শিশু একেবারেই প্রস্রাব না করে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে। গায়ে কোনো হাম বা লুতি উঠলে। গলা ব্যথা থাকলে। শ্বাসকষ্ট হলে। খুব জ্বর হলে। তাপমাত্রা ১০২-এর বেশি হলে। জ্বর কমে গিয়ে দুই থেকে এক দিন পর আবার হলে।জ¦র ৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকলে।  জ¦রের সঙ্গে পাতলা পায়খানা বা বমি ১২ ঘণ্টার বেশি থাকলে।

ডা. আতিকা সুলতানা
এমবিবিএস (ডিইউ) ডিএমইউ (আলট্রাসাউন্ড) পিজিটি
(গাইনি অ্যান্ড অবস)