শেয়ার বাজারে আবারো কেলেংকারী চক্রের হোতাদরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

শেয়ার বাজারে আবারো কেলেংকারী চক্রের হোতাদরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
দেশের শেয়ারবাজারে আবারও ভয়াবহ ধস নেমেছে। একদিনে গ্রাহকদের পাঁচ হাজার কোটি টাকা লাপাত্তা। স্বল্প আয়ের মানুষ যারা জীবনের সমস্ত অর্জন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছেন তাদের মাথায় হাত। পথে বসার মতো অবসন্থা হয়েছে। এর এগের শেয়ার বাজারে ধসের ঘটনায় অনেকে আত্মহত্যা করেছেন। কেউ কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কেউ কেউ আবার আজন্ম পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছেন। আর শেয়ার বাজারের ধসের সুবিধাভোগীরা ফুলে ফেপে আরো বড় হয়েছেন। সতেজ হয়েছে তাদের অর্থ-বিত্তের খামার। অভিযোগ উঠেছে ১৯৯৬ ও ২০১০-এ যারা শেয়ার বাজারে ওই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন সেই চক্ররাই এবারের শেয়ার বজারের কেলেংকারীর নায়ক। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার। এই কেলেংকারীর সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে ভবিষ্যতে আমরা যে পঙ্কে পড়েছি সেখান থেকে উঠতে পারবো না। গভীর অতলে ডুবে যাবে আমাদের দেশ। গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় একশ পয়েন্ট। মূল্য সূচক ধসে পড়ায় একদিনেই বিনিয়োগকারীদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের দরপতন হচ্ছে কয়েক মাস ধরেই। তবে দুই সপ্তাহ ধরে দরপতনের মাত্রা বেড়েছে। শেষ ১১ কার্যদিবসের মধ্যে ৯ কার্যদিবসই দরপতন হয়েছে। বাজারের এমন দুরবস্থায় প্রতিনিয়ত পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা সিংহভাগ বিনিয়োগকারীই এখন দিশেহারা। ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজারের ধসে স্বর্বস্ব হারিয়ে অনেকে পথে বসেছেন। তারপর আবারও শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু ২০১০ সালের ধস অনেক পরিবারের সদস্যদের জীবন হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়েছে। টাকার শোক সামলাতে গিয়ে গৃহহারা হয়েছেন অনেকে। দাম্পত্য জীবন হশায় ডুবে গেছে তাঁদের। সংসার ভেঙেছে অনেকের। এবার আবার শেয়ারবাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা উধাউয়ের ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক গ্রহাক। এই গ্রাহকদের পাশে কে দাঁড়াবে? কে নেবে এদের দায়িত্ব? শেয়ারবাজারের আস্থা ফেরাতে না পারলে ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হবে। গ্রহাকদের দাবি শেয়ারবাজারে কোনো তারল্য সংকট নেই। কারসাজি চক্রের খপ্পরে পড়ে বাজারে এমন দুরবস্থা বিরাজ করছে। বাজারে যদি তারল্য সংকট থাকতো তাহলে আজকে কীভাবে ৩৬৫ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হলো? ২০১০ ও ১৯৯৬ সালে যে চক্র বাজার থেকে ফায়দা লুটছে, তারাই আবার বাজারে সক্রিয় হয়েছে। তাই বাজারে আবারো ধস নেমেছে। বারবার শেয়ারবাজারে ধস নামে। হাজার হাজার কোটি টাকা লাপাত্তা হয়ে যায়। কিন্তু সরকার এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না বা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই ওই চক্ররা বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারে গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে এব্যাপারে শূন্য সহনশীল (জিরো টলারেন্স) নীতি গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে শেয়ারবাজার কেলেংকারীর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা চাই, স্বল্প আয়ের এবং স্বল্প পূজির মানুষ যেন পথে না বসে সেদিকে নজর দিতেই হবে।