সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি বিজন ও সম্পাদক সুজন

বিজন সিকদারকে সভাপতি ও সুজন আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মহানগর কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সদর রোডস্থ কীর্তনখোলা মিলনায়তনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার দ্বিতীয় কমিটি পরিচিতি সভায় ওই তথ্য জানানো হয়। পরিচিতি সভা শেষে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এর আগে একটি মিছিল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিজন সিকদার।
১৩ সদস্য বিশিষ্ট নবনির্বাচিত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মহানগর শাখার কমিটিতে সভাপতি বিজন সিকদার, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান রাকিব, সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক লামিয়া সাইমন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফারজানা আক্তার, প্রচার প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক লিয়া মনি, পাঠাগার সম্পাদক মির্জা মৌরিন জুঁই, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ফারহান, সদস্য হৃদয় কুমার বিশ্বজিৎ, জয়া হালদার, রেজওয়ান হোসেন সিয়াম, মৃদুলা মজুমদার।
সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কমরেড নিখিল দাস, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ ন ম আব্দুল হাই, বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি সদস্য সচিব সুজন আহমেদ, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় আলোচকরা বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা এক কঠিন সময় পার করছে। দেশের দারিদ্র্যের হার দিন দিন বাড়ছে আর সেই সাথে ঝরে পড়ছে উদ্বেগজনক হারে শিক্ষার্থী সংখ্যা। কাগজ-কলমসহ শিক্ষা উপকরণের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির ফলে শিক্ষার্থীরা আজ আধপেটা খেয়েও শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করতে পারছে না। একদিকে যেমন অর্থনৈতিক এই সংকটগুলো চারদিক থেকে ঘিরে ধরছে অন্যদিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও নেই কোনো শিক্ষা রক্ষার আয়োজন, এবছরেও শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অথচ ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে বাজেট ন্যূনতম ২৫ শতাংশ হওয়া দরকার।
বক্তারা বলেন, আজকে যেসব শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের জন্য সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ খুবই কম। আবার কাল যেসংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের উচ্চশিক্ষা ও অনিশ্চিত। ২০২২ সালে এইচএসসি উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। এরমধ্যে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল, অথচ আমাদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মোট আসনসংখ্যা এক লাখের কম। অর্থাৎ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা দেওয়ার মতো সরকারি আয়োজন ও আমাদের দেশে নেই!
আলোচকরা আরও বলেন, আজকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। ফলে ছাত্রলীগের একচেটিয়া সন্ত্রাস ও হল দখলদারিত্বের ঘটনাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে। আবাসিক হলে র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা নিত্যদিনের খবর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার না হওয়ায় এগুলো বেড়েই চলেছে । কেড়ে নেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মতো প্রকাশের স্বাধীনতা। আন্দোলনের ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করলেও দাঁড় করিয়েছে তার প্রতিচ্ছবি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট যা নতুন বোতলে পুরানো মদ ছাড়া আর কিছুই নয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এই শিক্ষা ওপর এসব আক্রমণ, শাসকশ্রেণীর শিক্ষা সংকোচনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম পরিচালনা করছে। আগামীতেও নবনির্বাচিত নেতারা এই নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং বর্তমান অপশাসন-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।