সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

বরিশালে সামাজিক দূরত্ব কিংবা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। সড়কের পাশে, দোকানের সামনে রং-তুলি দিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে চৌকা বক্স এঁকে দিয়ে সচেতন করা হচ্ছে নাগরিাকদের। গত কয়েকদিন ধরে নগরের গুরুত্বপূণ স্থানে ওই আঁকার কাজ করছে আঞ্চলিক দৈনিক ভোরের আলো এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।

গতকাল সোমবার নগরের সদর রোড, অশ্বিনী কুমার হল চত্বর, কাকলীর মোড়ে সড়কে ও দোকানের সামনে রং-তুলি দিয়ে ওই বক্স তৈরির কাজ করে ভোরের আলোর সংবাদকর্মীরা এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা।

দৈনিক ভোরের আলোর বার্তা সম্পাদক তন্ময় কুমার নাথ বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারপরও সাধারণ মানুষ ঘর ছেড়ে বাইরে আসছে। তাদের সচেতন করতে ভোরের আলোর পক্ষ থেকে ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, বাজারসহ বিভিন্ন গুররুত্বপূর্ণ স্থানে রং দিয়ে বক্স এঁকে দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষদের করোনা থেকে সচেতন করা এবং সতর্ক করা। এই উদ্যোগের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনও কাজ করছে। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সামাজিক, সাংস্কৃতিক সব সংগঠনের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করা দরকার। ভোরের আলো সেই কাজটি করছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নগরের বিভিন্ন স্থানে নাগরিকরে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দূরত্ব বজায় রাখতে এঁকে দেওয়া হচ্ছে বৃত্ত। গতকাল সোমবার সদর রোড কাকলির মোড়ে পুলিশের সার্জেন্ট মো. রানা মিয়া তার সহকর্মীদের নিয়ে দোকানের সামনে সাদা রং দিয়ে বৃত্ত এঁকে দিয়েছেন। একটু পরে সেখানে যোগ দেয় আঞ্চলিক দৈনিক ভোরের আলোর সদস্যরা। পুলিশ এবং সংবাদকর্মীরা একজোট হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বক্স ও বৃত্ত এঁকে দেয়।

পুলিশ সার্জেন্ট মো. রানা মিয়া জানান, মেট্রোপলিন পুলিশের পক্ষ থেকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সামাজিক দূরত্¦ চিহ্ন এঁকে দেওয়ার নিদের্শ দিয়েছেন মেটোপলিটন পুলিশ কমিশনার। ওই নির্দেশনার অংশ হিসেবে তিনি সদর রোডে কাজ করছেন।

করোনা সংক্রমণ এড়াতে ঘরে থাকার নির্দেশনা থাকলেও রাস্তায় বাড়ছে মানুষের ভীড়। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু মানুষ ওই নির্দেশনা মানতেই চাইছে না। সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে ব্যতিক্রমী ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামাজিক কিংবা শারীরিক দূরত্ব কেবল বাইরে নয় ঘরেও বজায় রেখে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে কর্মসূচি থেকে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, র‌্যাবের পক্ষ থেকে প্রচারণা অব্যাহত আছে। এর বাইরে বরিশাল সিটি করপোরেশন, সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, উদীচী, ভোরের আলোসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মানুষদের সচেতন করতে কাজ করছে। এর বাইরে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা নিয়ে কাজ করছেন অনেক বিত্তবান ও সাধারণ মানুষ।

ভোরের আলোর পক্ষ থেকে জনগণকে রাস্তায় বের হলেও সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে অনুরোধ জনানো হয়েছে। তারা নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, নতুন বাজার, হাসপাতাল রোড, জেল খানার মোড়, সদর রোড, অশ্বিনী কুমার হল, কাকলির মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে এবং ওষুধ ও মুদী দোকানের সামনে রং দিয়ে চতুর্ভূজ রেখা এঁকে দেয়।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান ভোরের আলোকে বলেন,  গত রোববার সন্ধ্যা থেকে ভীড় একটু আমরাও লক্ষ্য করেছি। পুলিশ, সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে নাগরিকদের ঘরে থাকার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমরা চাই মানুষকে আশ^স্ত করে ঘরে ফেরাতে। এই কাজে পুলিশের সঙ্গে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও ভূমিকা রাখতে পারে। সবাই মিলে করোনা মেকাবেলায় উদ্যোগ নিতে হবে।