বরিশাল মহানগর গেট, এক বছরের কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি

বরিশাল মহানগর গেট, এক বছরের কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি

বরিশাল মহানগরের দুই প্রান্তে প্রবেশ মুখে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সিটি গেট নির্মাণ কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। পাঁচ কোটি টাকা ব্যায়ে এক বছরে কাজ শেষ করার কথা ছিল। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মহানগরের দুই গেট। দুটি গেটের একটির মাত্র ৩৩ ভাগ এবং অন্যটির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করপোরেশনের।

বরিশাল মহানগরের গড়িয়ারপাড় এলাকা এবং শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢালে ওই গেট দুটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ১১ জুন। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পাঁচ বছর একই অবস্থায় পড়ে আছে।


সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের গড়িয়ারপাড় এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের দুই পশে কেবল দুটি থাম (পিলার) স্থাপন করেই কাজ শেষ করে দিয়েছেন ঠিকাদার। নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে সড়কের দুই পাশের বেশ কিছু গাছও কাটা হয়। কিন্তু কাজ আর এগোয়নি। অন্যদিকে নগরের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢালে নির্মিতব্য সিটি গেটের কাজ ৭০ ভাগ শেষ হলেও সমাপ্ত হয়নি। নগরবাসীর অভিযোগ অর্থ গচ্ছা গেলেও সিটি গেট নির্মাণ শেষ হয়নি।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, ২০১৫ সালের ১১ জুন নগরের গড়িয়ারপাড় এবং শহীদ আবদুর রব সেরনবিয়াবাত সেতু এলাকায় দুটি সিটি গেট নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। গড়িয়ারপাড় এলাকার জন্য ২ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় ধরে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতুসী ট্রেডার্সকে কাজ দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তারা কাজ শুরুও করে। মাত্র ৩৩ ভাগ কাজ শেষ করে। এরপর আর কাজ এগোয়নি।
অন্যদিকে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত সেতুর ঢালে গেট নির্মাণের জন্য ২ কোটি ৩৬ লাখ ৯২ হাজার ৩২৬ টাকা  বরাদ্দ করা হয়। একই সময়ের কার্যাদেশ হলেও কাজ শুরু করতে দেরি হয়। তবে এই গেট নির্মাণের ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে।


আবদুর রব সেরনিয়াবত সেতু এলাকার বাসিন্দা মো. হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেন। এখান সিটি গেট নির্মাণের নামে দুই বছরেরও বেশি সময় সড়কের অর্ধেক বন্ধ করে দিয়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি করা হয়। এরপর ছয় মাস গেট নির্মাণের সামগ্রি ঝুলে থেকেছে। সেখান থেকে কাঠ বাঁশ পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু কাজ আর এগোনি।

নগরের গড়িয়ার পাড় এলাকার বাসিন্দা নজিউর রহমান ভোরের আলোকে বলেন, ২০১৫ সালে কাজ শুরু করে সড়কের দুই পাশে দুটি পিলার করেছে মাত্র। তাও অসম্পূর্ণ। ওই কাজ করার সময় মহাসড়রেক পাশে থাকা বেশ কিছু গাছ কাটা হয়। তখন গাছ কাটতে বারণও করা হয়েছেছিল। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে দুটি পিলার ছাড়া আর কোন কাজ হয়নি। কি কারণে কাজ বন্ধ আছে তও জানি না।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রেেকৗশলী মো. আনিচুজ্জামান ভোরের আলোকে বলেন, বরিশাল মহানগরের দুই প্রান্তে দুটি সিটি গেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েলেও সেটি সমাপ্ত হয়নি। কেন শেষ হয়নি সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে বর্তমান মেয়র নতুন একটি নকশা করিয়েছেন। আগামী যে কোন প্রকল্পের মাধ্যমে সিটি গেট নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

সিটি গেট নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা তখনকার করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী মো. মামুন অর রশীদ, দুটি সিটি গেট নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ দরকার তা পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ না পাওয়ার কারণেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এব্যাপারে ২০১৫ সালে দায়িত্বে থাকা এক দায়িত্বশীল প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোরের আলোকে বলেন, ওই সময় ঠিকাদারদের গাফিলতি, সড়ক ফেরলেন করার পরিকল্পনা এবং অপর্যাপ্ত বরাদ্দের কারণে শেষ পর্যন্ত আর সিটি গেট নির্মাণ করা শেষ করা সম্ভব হয়নি। মহাসড়কের গাছ কাটা এবং সড়ক প্রসস্তকরণ কাজের জন্য গড়িয়ারপাড় এলাকার কাজ বন্ধ করা হয়। কিন্তু শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু এলাকার গেট নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তা শেষ হয়নি।