বরিশালে জনবহুল এলাকাসহ যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন

বরিশালে জনবহুল এলাকাসহ যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন


বরিশালে মহাসড়হ, জনবসতিপূর্ণ এলাকার ভবনসহ যত্রতত্র গড়ে উঠেছে দাহ্য পদার্থ লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) স্টেশন। জানমালের ঝূঁকি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে সুশীল সমাজ। খবর নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপর দায় চাপিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা বিস্ফোরক পরিদপ্তরের। নিয়ম লংঘন হলে বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারী জেলা প্রশাসনের।

বরিশালে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহার বাড়ছে। গ্যাস ভিত্তিক প্রচুর যানবাহন চলাচল করছে বরিশালে। এ কারণে বরিশালে একের পর এক গড়ে উঠেছে এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন। আবাসিক এলাকা এবং বহুতল ভবনের গা ঘেষে, মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র এসব অটো গ্যাস স্টেশন গড়ে ওঠায় ঝূঁকিতে পড়ছে সাধারণ বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশালে আগে গ্যাস ভিত্তিক কোন যান্ত্রিক যান ছিলো না। গত কয়েক বছর ধরে বরিশাল নগরীসহ জেলায় বেড়েছে গ্যাস ভিত্তিক যানবাহনের ব্যবহার। এতে পরিবেশ দুষন এবং কালো ধোয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছেন স্থানীয় জনগণ। গ্যাস ভিত্তিক যানের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বরিশালে গড়ে উঠছে একের পর এক এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন। এসব গ্যাস স্টেশন গড়ে উঠলেও বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে তথ্য নেই।

নগরীর রূপাতলীর কাঠালতলা এলাকার কবির হোসেন, মো. রফিক, আবুল কালামসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, আবাসিক এলাকায় এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশনের কারণে স্থানীয় হাজারো পরিবারের জানমাল অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানী ও সম্পদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। আবাসিক এবং ব্যস্ততম এলাকা থেকে ঝূঁকিপূর্ণ এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছেন আতংকিত বাসিন্দারা।

জ্বালানী বিশেষজ্ঞ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনি বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া বলেন, সরকারী নির্দেশনা মেনে এলপিজি স্টেশনগুলো নিরাপদ দূরত্বে স্থাপন করা উচিত। এলপিজি স্টেশনগুলোতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে আশপাশে জনবসতি থাকলে জানমালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্ককা রয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। 

বরিশালের বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ সমুদয় দায় চাপিয়েছেন পরিবেশ অধিপ্তরের কাঁধে। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেলেই অটো গ্যাস স্টেশনের অনুমতি দেয় বিস্ফোরক পরিদপ্তর। জনবসতি থেকে কত ফুট দূরত্বে অটো গ্যাস স্টেশন নির্মাণ করা যাবে তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক। 

এব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আবদুল হালিম বলেন, বরিশালে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অটো গ্যাস স্টেশন নির্মাণের কোন খবর তার জানান নেই। এলপিজি স্টেশন নির্মাণে পরিবেশ এবং বিস্ফোরক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন। কেউ অনুমতি ব্যতিত এবং নীতিমালা ভঙ্গ করে ঝূঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস স্টেশন নির্মাণ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, আবসিক ভবনের গা ঘেষে কিংবা জনবহুল এলাকায় এলপিজি স্টেশন নির্মাণ ঝূঁকিপূর্ন। জনস্বার্থে ঝূকিপূর্ণ এলপিজি স্টেশন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।