ভোলায় জোয়ারের পানি বিপৎসীমার উপরে

সাগরে নিম্মচাপ এবং পূর্ণিমার কারণে ভোলার মেঘনা তেতুলিয়া নদীতে পানির চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার মেঘনায় জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে বাঁধের বাইরে অন্তত ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছে। অপর দিকে দৌলতখান উপজেলায় শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। তবে বাঁধ রক্ষায় তৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন দিন ধরে সাগরে নিন্মচাপ এবং সেই সাথ পূর্ণিমার কারণে মেঘনা নদীতে পানির চাপ অনেক বেড়েছে। বাঁধের বাইরে নদী তীরবর্তী নিন্মাঞ্চল গুলো ভরা জোয়ারের সময় ৪ থেকে ৫ হাত পানিতে তলিয়ে যায়। চরাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে। এতে ভোলা সদর, দৌলতখান, মনপুরা এবং চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল এবং বাঁধের বাইরে অন্তত ২০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছে।
এছাড়া দৌলতখান উপজেলার দৌলতখান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাধাভল্লব গ্রামে মেঘনার প্রবল পানির চাপে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের নদীর পার্শ্ববর্তী অংশে প্রয় ২০০ মিটারের মত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী ভাঙ্গন বাঁধের একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। বাঁধের ঢালে থাকা ৭ টি বসত ঘর ভেঙে গেছে। আরও কয়েকটি বসত ঘর ভাঙার উপক্রম হয়েছে। এতে অর্ধ শতাধিক মানুষ খোলা আকাশের নিচে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ যথা সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব পালন করলে বাঁধ হুমকির মুখে পড়ত না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসিনতার কারণে এখন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভোলা -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, মেঘনায় পানির চাপ বেড়েছে তবে সেই অর্থে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ভাঙনের কবলে পড়ে বাঁধের ঢালে বসবাসকারী কয়েকটি পরিবারকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, হুমকির মুখে পড়া বাঁধ রক্ষায় ইতোমধ্যে সেখানে জিও ব্যাগ ও টিউবে বালি ভরে অর্থাৎ বালির বস্তা দেয়া হচ্ছে। পানির চাপ কমলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান আরও জানান, এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা ঠিকাদারের কোন গাফেলতি নেই। কারণ দৌলতখানে বর্তমানে শহর রক্ষা বাঁধের যে প্রকল্পটি চলছে, তা শুরু হয়েছে ২০২২ সালে এবং শেষ হবে ২০২৪ সালে। এই কাজ যথা সময়েই শেষ হবে বলে তিনি আশা করছেন।