বরিশালে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার বিয়ে

স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসার বাধনে জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন যাদে নিয়ে তারা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগে। সেই ভালবাসার সন্তানেরা নিজের পায়ে দাড়ালেও বাবা-মায়ের খোঁজ রাখেনা কেউ। বরিশালে এমনই নিঃসঙ্গ দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জীবেন নতুন আশার আলো জাগালো স্থানীয় কয়েক যুবক।
চাঁদা তুলে করা হয় বিয়ের আয়োজন।সামনে দাড়ানো ঘোড়ার গাড়ি। বাজছে মাইক। আর এই বিয়ে দেখতে ভির জমায় উৎসুক মানুষ।নিমন্ত্রন না পেলেও এক ঝলক দেখতে উৎসুক মানুষের ভির বরিশাল নগরীর দক্ষিন আলেকান্দার খান সড়কে।
রাস্তার পাশে ডিম বিক্রি করে জীবন যাপন করা ফুলসনি (৫৫) জীবনের নতুন ঠিকানা করে দিল এলাকার যুব সমাজ। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন রাস্তার পাশে সেদ্ধ ডিম বিক্রি করে নিজের পেটের খোরাক যোগাতো বৃদ্ধা বকুল বেগ ফুলসনি।
একজন ঘটকের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব বরিশাল বিআইডব্লিউট’র কর্মচারী মো. মাহবুব রহামান জানতে পেরে এলাকার যুব সমাজের সাথে আলাপ করে এ বিয়ের আয়োজন করে।
শনিবার (১৩ ই মার্চ) বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করে মাইক বাজিয়ে এবং ঘোড়ার গাড়িতে করে কনেকে নতুন ঠিকানায় বিদায় দিলেন তারা।
বর বজলু খান (৬৩) পেশায় রাজ মিস্ত্রি, বাড়ি বামরাইল, উজিরপুর। বর্তমানে নগরীর দরগাবাড়ি এলাকায় বসবাস করেন।
বৃদ্ধ বয়সে তাদের এই বিয়েতে খুশি এলাকাবাসী।
বরের ৩ ছেলে মেয়ে। বর্তমানে তার খোঁজখবর না রাখায় নিজেকে দেখভাল করার জন্য জীবনসঙ্গী হিসেবে ফুলসনি বেগমকে বিয়ে করেছেন তিনি। তার আগের স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।
কনে ফুলসনি বেগমের বাড়ি খান সড়ক এলাকায়। আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। স্বামী মৃত্যুবরণ করার পর ঝিয়ের কাজ করতেন। দুই ছেলে একজন দশ বছর বয়সে মারা যান। অন্য ছেলে বর্তমানে ঢাকায় চাকুরী করেন। ছেলে খোঁজ না নেয়ায় খান সড়ক এলাকায় ডিম বিক্রি করে তার জীবন চলতো।
দরিদ্র দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার নিসঙ্গতা দেখেই স্থানীয় যুবকেরা চাঁদা তুলে শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৩০ হাজার টাকা দেন মোহরে বিয়ে করান।